মদুনাঘাটে ব্যবসায়ী হাকিম হত্যার রহস্য উদঘাটন: গ্রেফতার ৬
নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
প্রকাশিত হয়েছে: ১০ নভেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মদুনাঘাট ব্রিজ এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচনে সাফল্য অর্জন করেছে জেলা পুলিশ। জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও সহযোগীদের শনাক্তসহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, দেশীয় অস্ত্র, মাদকদ্রব্য ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম সানতু, বিপিএম-বার এর নির্দেশনায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে এই সাফল্য আসে।
গত ৭ অক্টোবর ২০২৫ সকালে ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম নিজ গাড়িতে হামিম এগ্রো ফার্মে যান। বিকেলে শহরে ফেরার পথে মদুনাঘাট ব্রিজের পশ্চিম পাশে পৌঁছালে মোটরসাইকেলযোগে আসা সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি মারা যান।
ঘটনার পর প্রাপ্ত তথ্য ও গোপন সূত্রের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ৩১ অক্টোবর রাউজানের গরীব উল্লাহ পাড়া এলাকা থেকে মো. আব্দুল্লাহ খোকন (ল্যাংড়া খোকন) গ্রেফতার হয় এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি প্রদান করে।
তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২ নভেম্বর রাউজানের চৌধুরীহাট এলাকা থেকে মো. মারুফ কে গ্রেফতার করা হয়। মারুফের জবানবন্দিতে জানা যায়, হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র মো. সাকলাইন হোসেন এর কাছে রয়েছে। পরে ৪ নভেম্বর রাতে অভিযান চালিয়ে সাকলাইনকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার কাছ থেকে একনলা বন্দুক, একটি এলজি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তী সময়ে মারুফ, জিয়া ও সাকলাইনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৯ নভেম্বর চৌধুরীহাটের আইয়ুব আলী সওদাগরের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে ২ জনকে গ্রেফতারসহ উদ্ধার করা হয় ৪টি বিদেশি পিস্তল, ১টি রিভলভার, ১টি চায়না রাইফেল, ১টি শটগান, ৭টি ম্যাগাজিন, রাইফেল, শর্টগান ও পিস্তলের মোট ৮৫ রাউন্ড গুলি, ২টি দেশীয় রামদা, ১টি রকেট ফ্লেয়ার, ৫০ পিস ইয়াবা ও ২৫০ গ্রাম গাঁজা, ৯৬,০০০ টাকা নগদ
গ্রেফতারকৃতরা হলেন: মো. আব্দুল্লাহ খোকন (ল্যাংড়া খোকন), মো. মারুফ, জিয়াউর রহমান, মো. সাকলাইন হোসেন, মো. সাকিব, শাহেদ।
স্থানীয় সূত্র ও আসামিদের জবানবন্দি অনুযায়ী, রাউজান এলাকার বালুমহল নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়।
হাকিম হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ডসহ বাকি আসামিদের পরিচয় জেলা পুলিশ ইতোমধ্যেই শনাক্ত করেছে।
এ ঘটনায় এলাকায় চেকপোস্ট, টহল, বিশেষ অভিযান ও রাত্রীকালীন সাঁড়াশি তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, সন্ত্রাস দমন ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।




