মহেশখালীতে ভুয়া রিপোর্টে চলছে আইল্যান্ড হেল্থ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার
পূজার ছুটিতে ঢাকায় অবস্থানরত টেকনোলজিস্টের নকল স্বাক্ষরে চলছে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান
কক্সবাজার প্রতিনিধি | সিটিজি পোস্ট
প্রকাশিত হয়েছে: ২ অক্টোবর, ২০২৫

কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান গেইটের সামনে গড়ে উঠা ‘আইল্যান্ড হেল্থ কেয়ার’ নামের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চলছে চরম অনিয়ম। পূজার ছুটিতে ঢাকায় অবস্থান করা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রশান্ত রায়ের নাম ও স্বাক্ষর ব্যবহার করে প্রতিদিন রোগীদের পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট সরবরাহ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রশান্ত রায়ের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বীকার করেন, ‘‘বর্তমানে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন এবং আগামী সোমবার মহেশখালী ফিরবেন।’’ অর্থাৎ তার অনুপস্থিতিতেও নিয়মিত রোগীদের পরীক্ষা ও রিপোর্ট প্রদান করছে সেন্টারটি।
তথ্যসূত্র বলছে, গত ১ সেপ্টেম্বর ৭৫ বছর বয়সী রোগী মোস্তাফা ট্রপোনিন-১ পরীক্ষা করান এই ল্যাবে (প্যাশেন্ট আইডি-১৩২৯৭)। রিপোর্টে স্বাক্ষর করা হয়েছে ছুটিতে থাকা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রশান্ত রায়ের নামে। একইভাবে, ২ সেপ্টেম্বর ৬৫ বছর বয়সী অজিত কুমার সিবিসি পরীক্ষা করান (প্যাশেন্ট আইডি-১৩০৫৭) এবং সেই রিপোর্টেও রয়েছে প্রশান্ত রায়ের স্বাক্ষর।
প্রতিবেদকও অনুসন্ধানীভাবে একটি আরবিএস পরীক্ষা করান। সেখানেও আগের মতো প্রশান্ত রায়ের স্বাক্ষরসহ রিপোর্ট সরবরাহ করে ল্যাব কর্তৃপক্ষ (প্যাশেন্ট আইডি-১৩০৬৭)।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত তিনদিনে কয়েকশো রোগীকে ভুয়া রিপোর্ট সরবরাহ করেছে তারা। এছাড়াও আইল্যান্ড হেল্থ কেয়ারের লাইসেন্স গত দুই বছর ধরে নবায়ন করা হয়নি। শুধু তাই নয়, ল্যাবে রেডিওলজিস্ট ছাড়াই এক্সরে পরীক্ষা করানো হচ্ছে। এসব পরীক্ষা চালাচ্ছেন বহিরাগত এক যুবক, যার এই বিষয়ে কোনো প্রশিক্ষণ বা যোগ্যতা নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটির দায়িত্বে থাকা কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহফুজুল হক জানান, “কোনো ল্যাবে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও রেডিওলজিস্ট ছাড়া পরীক্ষা করানোর বিধান নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ হেদায়েত উল্যাহ বলেন, “অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে সমন্বয় করে দ্রুত অভিযান চালানো হবে।”
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, অনভিজ্ঞ ব্যক্তির হাতে রোগ নির্ণয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করানো শুধু প্রতারণাই নয়, এটি রোগীদের জীবনের জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
সিটিজিপোস্ট/ এসএইচএস

.jpg&w=3840&q=75)


