কর ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতিই সবচেয়ে বড় বাধা বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, 'জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কর ব্যবস্থায় দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব।"
শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) মিলনায়তনে কর ব্যবস্থাপনায় সংস্কার নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশে কর শিক্ষা নিয়ে এখনও কোনো বিস্তৃত ব্যবস্থা নেই। উচ্চশিক্ষার কোনো কোনো ক্ষেত্রে সীমিত পরিসরে কর বিষয়ে পাঠ্যসূচি থাকলেও, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে কর শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। 'কর বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে শিক্ষা ব্যবস্থায় এর অন্তর্ভুক্তি অপরিহার্য,' বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব থাকলে কর ব্যবস্থাপনায় সুশাসন প্রতিষ্ঠা কঠিন। তবে বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার কারণে কর প্রশাসনে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হচ্ছে।'
কর অব্যাহতির বিষয়ে তিনি বলেন, 'যত কর আদায় হয়, তার চেয়ে বেশি কর অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ কারণে আমরা কর আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছি। ভবিষ্যতে আর সরকার চাইলে যেকোনো সময় কর অব্যাহতি দিতে পারবে না। শুধু জাতীয় স্বার্থে এবং সংসদের অর্থবিলের মাধ্যমে কর অব্যাহতির বিষয় বিবেচনা করা যাবে।'
আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিং প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, 'এটি আমাদের সমন্বিত ব্যর্থতা। এখন গুগলে সার্চ করলেই বোঝা যায় পণ্যের প্রকৃত মূল্য। ব্যাংক ও কাস্টমস যদি এলসি খোলার সময় যথাযথ যাচাই-বাছাই করে, তবে মূল্য গোপন করা কঠিন হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রকৃত মূল্যে আমদানি-রপ্তানি না হলে সৎ করদাতা ও কমপ্লায়েন্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই এই অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে আমাদের আরও দক্ষতা ও প্রযুক্তি দরকার।'
বর্তমান অডিট পদ্ধতির সমালোচনা করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, 'অডিট মানেই যেন একটি ভীতিকর বিষয়। এই ভীতি দূর করতে হবে। প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে, যাতে কর ব্যবস্থা নিরপেক্ষ, আধুনিক ও গ্রহণযোগ্য হয়।'
সিটিজি পোস্ট/ এসএইচএস