হাসিনার সাবেক পিয়ন ‘পানি জাহাঙ্গীরের’ বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের মামলা

সিটিজি পোস্ট প্রতিবেদক

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ১ নভেম্বর, ২০২৫

হাসিনার সাবেক পিয়ন ‘পানি জাহাঙ্গীরের’ বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের মামলা

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে ‘পানি জাহাঙ্গীর’-এর বিরুদ্ধে একশ কোটি টাকা অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের প্রাথমিক অনুসন্ধানে অর্থপাচারের উল্লেখযোগ্য প্রমাণ মেলায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করা হয়।

সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম প্রথমে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি স্বল্প সময়ের জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পান।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ওই সময়েই তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হন এবং প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন।

২০১০ সালে তিনি ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসার অনুমোদন নেন। কিন্তু এর আড়ালে অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংক লেনদেন পরিচালনা করেন। কোম্পানির নামে খোলা বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ৫৬৫ কোটি টাকারও বেশি লেনদেন হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।

সিআইডির অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব টাকার বড় অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে। এই অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং চক্রের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে।

এছাড়া, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। তারা ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে সম্পদ বা বিনিয়োগের জন্য সরকারি অনুমোদন না থাকলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে সম্পদ ক্রয় করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

সিআইডির তদন্তে আরও প্রকাশ, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।

সিআইডির এক কর্মকর্তা জানান, “অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অর্থপাচার চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”

ক্যাটাগরি:
অপরাধজাতীয়