দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতার পর অবশেষে পাইকারি বাজারে কমেছে চিনির দাম। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে প্রতি কেজি চিনি এখন বিক্রি হচ্ছে ৯৫–৯৬ টাকায়। তবে খুচরা বাজারে এখনও কেজিপ্রতি দাম ১০৫ থেকে ১১০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে।
২০২২ সালের অক্টোবরে প্রথমবার দেশে চিনির দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এরপর দীর্ঘ সময় বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। কিছু মাস আগে এ দাম বেড়ে ১৩০–১৩৫ টাকায় পৌঁছায়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে চিনি আমদানিতে শুল্ক কমানো, সরবরাহ বাড়ানোসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়। গত ১৩ আগস্ট ৫ লাখ মেট্রিক টন চিনি আমদানির অনুমতি দেওয়ার পর দাম আরও কমতে শুরু করেছে।
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগে বড় গ্রুপগুলো এককভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করলেও এখন একাধিক শিল্পগ্রুপ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীও চিনি আমদানিতে যুক্ত হয়েছেন। ফলে সরবরাহ বেড়ে দামে প্রভাব পড়েছে।
আড়তদার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এহসান উল্লাহ জাহেদী বলেন, “গত এক বছরে চিনি ১৩০ টাকা ছিল। এখন ৯৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্ববাজারে দাম কমার প্রভাবও দেশে পড়েছে।”
বিশ্ববাজারে দামের পতনের পেছনে রয়েছে উৎপাদন বৃদ্ধি। ব্রাজিল ও ভারত—বিশ্বের দুটি বড় উৎপাদক দেশ—চলতি বছরে চিনি উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়েছে। এর ফলে টনপ্রতি চিনি গত এক বছরে ৫৭৫ ডলার থেকে নেমে এসেছে ৪৭৩ ডলারে।
দেশে বছরে প্রায় ২২ লাখ টন চিনির চাহিদা রয়েছে, যার প্রায় পুরোটাই আমদানি করতে হয়। শুধু গত বছর আমদানিতে খরচ হয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি।
তবে পাইকারিতে দাম কমলেও খুচরায় এখনো কেজিপ্রতি ১০–১৫ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। ভোক্তারা বলছেন, খুচরা বাজারে কঠোর নজরদারি বাড়ানো দরকার, যাতে সাধারণ মানুষ প্রকৃত সুফল পেতে পারে।