চট্টগ্রাম বিভাগে ২৯ শতাংশ বিদ্যালয়ের কর্মবিরতি পালন

প্রাথমিক শিক্ষকদের ১০ গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মসূচি

সিটিজি পোস্ট প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক | সিটিজি পোস্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ৩০ নভেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম বিভাগে ২৯ শতাংশ বিদ্যালয়ের কর্মবিরতি পালন

সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন সহ ৩ দাবিতে নতুন আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। মূলত ৪টি সংগঠনের আহ্বানে ঘোষিত কর্মসূচিতে অনেক শিক্ষক কর্মবিরতি পালন করেনি। তবে চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার মধ্যে ৭টি জেলায় ২৯ শতাংশ বিদ্যালয় কর্মবিরতিতে অংশ নিয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের দাবি অনুযায়ী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও অর্থ মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করছে। পূর্বের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে উভয় মন্ত্রণালয়ের সাথে আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতৃবৃন্দের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষকরা কর্মক্ষেত্রে ফিরে যায়। তবে দ্রুত প্রজ্ঞাপন প্রদানের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষার আগে ফের আন্দোলনে গেছে ১২টি সংগঠনের মধ্যে ৪টি সংগঠন।

এদিকে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে চলমান কর্মবিরতির সর্বশেষ পরিস্থিতির একটি চিত্র উঠে এসেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য থেকে। বিভাগটির মোট ১১ জেলার মধ্যে যেসব আট জেলার তথ্য পাওয়া গেছে, সেখানে বিদ্যালয় সংখ্যা ৪৯৪৯। তার মধ্যে ৩৩৮৭টি বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি চলছে।

তথ্য অনুযায়ী, নোয়াখালীর ১২৫৩টি বিদ্যালয়ের প্রতিটিতেই কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। লক্ষ্মীপুরে ৭৩২টির মধ্যে ৭২১টি বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি চলছে। চাঁদপুরে ১১৫৬ বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫২২টিতে এই কার্যক্রম চলছে, আর ফেনীতে ৫৫৯ বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪৯৫টি এতে যুক্ত। কুমিল্লার ৩৫৮টি বিদ্যালয়ের সবকটিতেই কর্মবিরতি চলছে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে বান্দরবানে ৪৩৫ বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ৩০টি এই কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে। রাঙামাটিতে ৭০৭টির মধ্যে ৮টি বিদ্যালয় কর্মবিরতিতে রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি মো. আবদুর রহমান সিটিজি পোষ্টকে বলেন, চট্টগ্রামের কোন বিদ্যালয়েই কর্মবিরতি পালিত হয়নি। আগামীকাল (আজ) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষা প্রস্তুতির অংশ হিসাবে শ্রেণী কার্যক্রম সীমিত হলেও কর্মবিরতি হয়নি। তাছাড়া ১০ গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ কিংবা ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কোন নেতৃবৃন্দই কর্মবিরতির বিষয়ে আমাদের অবহিত করেননি। তবে বার্ষিক পরীক্ষার পর সংগঠনের ঘোষণা অনুযায়ী অনশন কর্মসূচি নিয়ে সহকারী শিক্ষকরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি কর্মবিরতি পালিত হয়েছে নোয়াখালী জেলায়। এই জেলার ১ হাজার ২৫৩টি সরকারী প্র্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতভাগ কর্মবিরতি পালিত হয়েছে। এছাড়া লক্ষ্মীপুর জেলার ৭৩২টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭২১টি বিদ্যালয়, চাঁদপুর জেলার ১ হাজার ১৫৬টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫২২টি বিদ্যালয়, ফেনী জেলার ৫৫৯টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪৯৫টি বিদ্যালয়, কুমিল্লা জেলার ২ হাজার ১০৭টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৫৮টি বিদ্যালয়, বান্দরবান জেলার ৪৩৫টি বিদ্যালয়ের ৩০টি এবং রাঙামাটি জেলার ৭০৭টি বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ৮টি বিদ্যালয় কর্মবিরতি পালন করেছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কোন বিদ্যালয় কর্মবিরতিতে অংশ নেয়নি।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, নোয়াখালী জেলায় আন্দোলনকারী সংগঠনের একজন শীর্ষ নেতা রয়েছে। যার কারণে নোয়াখালী জেলা সহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি জেলায় কম-বেশি কর্মবিরতি পালিত হয়েছে। চট্টগ্রাম সহ ৪টি জেলায় শতভাগ বিদ্যালয় কর্মবিরতিতে অংশ নেয়নি। সোমবার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ায় যথানিয়মে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদী চট্টগ্রাম বিভাগ ও জেলার কর্মকর্তাদের।

প্রসঙ্গত, কর্মবিরতি পালন না করা জেলাগুলোর মধ্যে চট্টগ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২ হাজার ২৮১টি, কক্সবাজারে ৬৫৮টি, খাগড়াছড়িতে ৫৯৩টি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে বিদ্যালয় রয়েছে ১ হাজার ১০৫টি। শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষার আগে কর্মবিরতি ঘোষণা ও পালনের কারণে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর এ বিষয়ে শিক্ষদের প্রতি ইতোমধ্যে কঠোর বার্তা দিয়েছে।

সিটিজিপোস্ট/এমএইচডি

ক্যাটাগরি:
শিক্ষা