চাঞ্চল্যকর শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলা: পাঁচ বছর পর একমাত্র আসামি গ্রেপ্তার

সিটিজি পোস্ট প্রতিবেদক

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

 চাঞ্চল্যকর শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলা: পাঁচ বছর পর একমাত্র আসামি গ্রেপ্তার

প্রায় পাঁচ বছর আগে ২০২১ সালের ২৭ জুন নগরীর চান্দগাঁও বাহির সিগন্যাল এলাকায় নুসরাত জাহান তরী নামের পাঁচ বছরের এক শিশুকে নিজ বাসায় জোরপূর্বক ধর্ষণ করে গলা টিপে হত্যা করে বাসার খাটের নিচে লাশ লুকিয়ে রাখে। শিশু তরীর মা ফাতেমা গার্মেন্টসে চাকরি শেষে বাসায় ফিরে মেয়ের মরদেহ পান।

অবশেষে চাঞ্চল্যকর শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলাটির রহস্য উদঘাটন করে একমাত্র আসামি রাসেল হোসেন শেখকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিট। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রোববার (৭ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। 

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) পিবিআই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, তরী হত্যার পর চান্দগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছিল। কিন্তু বছর অতিবাহিত হলেও তরী হত্যার রহস্য বের করা সম্ভব হয়নি। শেষে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয় পিবিআইকে। ঘটনার পর হত্যায় জড়িত সন্দেহে চার-পাঁচজনকে আটক করে করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল র‌্যাব। ওই সময় রাসেল হোসেন শেখকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল। দু’দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদেরকে র‌্যাব হেফাজত থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মর্জিনা আক্তার জানান, তরী হত্যার পর চান্দগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছিল। শুরু থেকে মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই। ঘটনার পরপরই ইমন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। কিন্তু ডিএনএ প্রোফাইলে ইমনের সাথে না মেলায় ভিন্ন মোড় নেয় তদন্ত। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয় পিবিআইকে। ঘটনার পর হত্যায় জড়িত সন্দেহে চার-পাঁচজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল র‌্যাব। ওই সময় রাসেল হোসেন শেখকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল। দু’দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদেরকে র‌্যাব হেফাজত থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল।

পুলিশ পরিদর্শক মর্জিনা জানান, টানা তদন্ত করে আমরা গত শনিবার চান্দগাঁও মোরশেদ কলোনি থেকে রাসেল হোসেন শেখকে গ্রেপ্তার করি। কৌশলে জিজ্ঞাসাবাদে তরীকে ধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার করে রাসেল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল জানান, তরীর পাশের বাসায় থাকতেন তিনি। তরীর মা ভোরে গার্মেন্টসে কর্মস্থলে চলে গেলে রাসেল ঘরে ঢুকে পাঁচ বছরের শিশুটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে গলা টিপে হত্যা করেন। পরে মরদেহ ঘরের খাটের নিচে লুকিয়ে রাখেন। কৌশলে ঘটনার বিভিন্ন আলামতও নষ্ট করেন। রাসেল জানান, ঘটনার সময় আশপাশে ঘরের লোকজন ঘুমিয়ে থাকায় কেউ কিছু বুঝতে পারেনি। ধর্ষণের পর হত্যার দায় স্বীকার করে গতকাল রবিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রাসেল।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান জানান, আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি চট্টগ্রাম মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আসামিকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

সিটিজিপোস্ট/জাউ

ক্যাটাগরি:
চট্টগ্রামঅপরাধ