চট্টগ্রামে এনসিপি নেতা জুবায়েরুল মানিকের বিরুদ্ধে এক নারী নেত্রীর একাধিক অভিযোগ
নিরাপত্তাহীনতায় 'আপ বাংলাদেশ' নেত্রী মাহবুবা ইলা
নিজস্ব প্রতিবেদক | সিটিজি পোস্ট
প্রকাশিত হয়েছে: ৩০ নভেম্বর, ২০২৫

দক্ষিণ চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও আনোয়ারা অঞ্চলের স্থানীয় রাজনীতিতে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কার্যকরী সদস্য এবং চট্টগ্রাম বেসরকারি কারা পরিদর্শক জুবায়েরুল আলম মানিকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, হুমকি ও অন্যান্য অনিয়মের অভিযোগ এনেছেন আপ বাংলাদেশ (ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ) চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সদস্য সচিব এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র মাহবুবা ইলা খাদিজা।
গেল বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর দায়ের করা একটি লিখিত অভিযোগপত্রে এসব অভিযোগ উত্থাপন করা হয়।
অভিযোগের বিবরণ
অভিযোগপত্রে মাহবুবা ইলা দাবি করেন, স্থানীয় বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার পর তিনি ব্যক্তিগত ও মানসিক চাপে পড়েন। অভিযোগে বলা হয়, এনসিপি নেতা জুবায়েরুল মানিক প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে বিরক্ত করেন এবং পরবর্তীতে হয়রানির পরিসর অনলাইনের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে।
ইলা আরও অভিযোগ করেন, ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি, চাঁদাবাজির হুমকি এবং পরিবারকে ক্ষতির আশঙ্কা দেখানো হয়।
এই নারী রাজনীতিবিদ দাবি করেন, এসব ঘটনার পর তিনি তীব্র মানসিক চাপে পড়েন এবং গত ১৪ মে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জীবনের নিরাপত্তাহীনতার কথা জানানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই স্ট্রোক করেন। হাসপাতালে ১৭ দিন চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরার পরও তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কটূক্তিমূলক পোস্ট ও মানহানিকর প্রচারণার মুখোমুখি হন বলে উল্লেখ করেছেন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন অনিয়ম যেমন চাঁদাবাজি, টেন্ডার সংক্রান্ত অনিয়ম, অবৈধ দখল ও নারী–সম্পর্কিত বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে মানিকের অনুসারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
ইলা দাবি করেন, তৎকালীন কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা ব্যবহার করে মানিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত
১৭ ফেব্রুয়ারি কর্ণফুলীতে শিক্ষার্থীদের আয়োজিত একটি মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও মশাল মিছিলে ছাত্রলীগের একটি অংশ যোগ দেওয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষার্থীরা প্রকাশ্যে জুবায়েরুল মানিক ও তার সহযোগীদের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘোষণা করে।
একজন সাংবাদিক ইলার কাছে কিছু ভিডিও ও সিসিটিভি ফুটেজ পাঠানোর পর বিদেশি নম্বর থেকে তাকে তা মুছে ফেলতে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
ইলা বলেন, “আমি এবং আমার পরিবার এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
অভিযুক্ত নেতার প্রতিক্রিয়া
অভিযোগগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিপি নেতা ও চট্টগ্রাম–১৩ (আনোয়ারা–কর্ণফুলী) আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী জুবায়েরুল আলম মানিক অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।
চট্টগ্রাম ১৩ আসনে এনসিপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী এই নেতা বলেন, “ইলার সঙ্গে আমার গত এক বছর কোনো যোগাযোগ নেই। আমি বিষয়টি জানি না।”
তার দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাকে লক্ষ্য করে “অপপ্রচার” চালানো হচ্ছে।
মানিক বলেন, “আমি চট্টগ্রাম-১৩ আসনে এনসিপির মনোনয়নপ্রার্থী। আমার নির্বাচনী কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার জন্যই এসব অভিযোগ আনা হচ্ছে।”
সিটিজি পোস্ট/এইচএস/এমএইচডি




