মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালালদের রাজত্ব: ৪ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ১১ জনের সিন্ডিকেট

সিটিজি পোস্ট প্রতিবেদক

মহেশখালী প্রতিনিধি | সিটিজি পোস্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ৮ অক্টোবর, ২০২৫

মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালালদের রাজত্ব: ৪ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ১১ জনের সিন্ডিকেট

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ রোগীরা। সরকারি হাসপাতালের সেবা নিতে এসে অনেকেই পড়ছেন দালালদের টানাহেঁচড়ায় ও প্রলোভনে।

জানা গেছে, হাসপাতালের আশেপাশে গড়ে উঠেছে একাধিক বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এসব প্রতিষ্ঠানে রোগী পাঠাতে কমিশনের ভিত্তিতে কাজ করছে একদল দালাল। তারা হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ, ভর্তি ওয়ার্ড, প্রসূতি ও শিশু ইউনিটসহ ডাক্তারদের চেম্বারে রোগীদের ঘিরে ধরে নিয়ে যাচ্ছেন নিজেদের নির্দিষ্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।

সরজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের মূল ফটক, জরুরি বিভাগের সামনের রাস্তা ও প্রসূতি ইউনিটের পাশে দালালরা প্রকাশ্যে অবস্থান করছেন।

গত সোমবার (৬ অক্টোবর) রাতে জরুরি বিভাগে শাহাবুদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে দেখা যায় রোগী নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করতে। জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, আমি ওয়ান হেলথ কেয়ারের হয়ে রোগী নিয়ে যাই, এতে কমিশন পাই। এ সময় প্রতিবেদকের সঙ্গে তিনি অসৌজন্যমূলক আচরণও করেন।

একইভাবে হাসপাতালের ফটকের সামনেও কয়েকজনকে রোগী টানাটানিতে দেখা গেছে। তারা দাবি করেন, ওয়ান হেলথ কেয়ারের স্টাফ আমরা, রোগী নেয়াই আমাদের কাজ।

তথ্য অনুসারে, নিউরন ডায়াগনস্টিক সেন্টার রোগী সংগ্রহের জন্য জাইতুন, রিপন ও ফয়েজ নামে তিনজনকে নিয়োগ দিয়েছে। ওয়ান হেলথ কেয়ার রোগী টানার কাজ করছে শাহাবুদ্দিন, রিমন, রিয়াজু, আজিজুল হক ও হাসান এই পাঁচজনের মাধ্যমে। মহেশখালী প্যাথলজিতে কাজ করছে নিজামুদ্দিন নামের একজন। আর আইল্যান্ড হেলথ কেয়ারের হয়ে সাইকুল হাদিস ও সাগর নামে দুইজন নিয়মিতভাবে রোগী নিয়ে যাচ্ছে।

জ্বরে আক্রান্ত রোগী আনোয়ার বলেন, হাসপাতালে পরীক্ষা করাতে যাচ্ছিলাম, তখন কয়েকজন এসে বলে বেসরকারি ল্যাবে কম টাকায় পরীক্ষা করে দিবে। সরকারি হাসপাতালেই করতে চাইলেও তারা টানাহেঁচড়া করে।

একই অভিজ্ঞতার কথা জানান মর্জিনা বেগম নামের এক নারী। তিনি বলেন, ‘‘গেইটে ঢুকতেই ২-৩ জন প্রেসক্রিপশন টানাটানি করে বলল, তাদের ল্যাবে সস্তায় পরীক্ষা হবে। বিষয়টি অত্যন্ত বিরক্তিকর।’’

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহফুজুল হক বলেন, ‘‘হাসপাতাল প্রাঙ্গণে রোগী টানাহেঁচড়া বন্ধে বারবার নিষেধ করা হয়েছে। তবুও তারা থামছে না, বরং উল্টো আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’’

কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদুল হক জানান, ‘‘সরকারি হাসপাতালের ভেতর বা গেইটে দালালদের প্রবেশের সুযোগ নেই। কেউ প্রমাণসহ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

সিটিজিপোস্ট/ এসএইচএস

ক্যাটাগরি:
কক্সবাজার