প্রায় সাড়ে তিনশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত চার লেনের ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটি ১৬টি পাহাড় খাঁড়া কেটে নির্মাণ করা হয়। তবে পাহাড় কাটার ক্ষেত্রে পরিবেশগত নিয়মনীতি উপেক্ষিত হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে সড়কটি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর এই অনিয়মের কারণে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)-কে একাধিকবার জরিমানাও করে।

সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাতের কারণে রাস্তাটির বিভিন্ন অংশে একাধিক ধসের ঘটনা ঘটেছে। ফলে একপাশের দুটি লেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং অপর পাশ দিয়ে উভয়মুখী যান চলাচল চালু রাখা হয়েছে। এতে করে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বেড়েছে। গত এক মাসে কয়েকটি দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জিইসি মোড় থেকে বায়েজিদ হয়ে মাত্র ১০ মিনিটে ফৌজদারহাট পৌঁছানো সম্ভব হওয়ায় এই সড়কটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছিল। কিন্তু একের পর এক পাহাড় ধস ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে তারা এই রুট ব্যবহার থেকে বিরত থাকছেন।

সিডিএর প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে, রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের কাজ বাকি রয়েছে এবং পাহাড় রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গেও আলোচনা চলছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাহাড় কাটায় কোনো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। ফলে বৃষ্টি হলেই বালির পাহাড় ধসে পড়ে রাস্তার ওপর। তারা সতর্ক করেছেন, এই ধারা চলতে থাকলে সড়কের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়বে এবং বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে।

চট্টগ্রাম মহানগরের যানজট কমাতে ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলমুখী চলাচল সহজ করতে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয় ১৯৯৭ সালে এবং একনেক অনুমোদন পায় ১৯৯৯ সালে। নানা জটিলতায় দীর্ঘ সময় ধরে প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্বিত হয় এবং শেষ পর্যন্ত ২০২৩ সালে সড়কটি চালু হয়।

চট্টগ্রামের পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফৌজদারহাট–বায়েজিদ লিংক রোড কার্যকর রাখতে হলে পাহাড় রক্ষা ও সড়ক নিরাপত্তায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। নইলে এই অবস্থা চলতে থাকলে রাস্তাটি গুরুত্ব হারাবে এবং চট্টগ্রামের যানবাহন চলাচলে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হবে।