বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো পুরোপুরি সুস্থ না হলেও, আইসিইউ থেকে এইচডিইউ পর্যায়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি আশা করছেন, আগামী জানুয়ারির মধ্যেই অর্থনীতি ‘ওয়ার্ডে’ ফিরে আসবে, অর্থাৎ আরও ভালো অবস্থায় পৌঁছাবে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক বছরের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতি তুলে ধরতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “দেশের অর্থনীতি এখনও কেবিনে ফেরার মতো অবস্থায় নেই। কিন্তু গরিব দেশের অর্থনীতি কেবিনে ফেরার জায়গা পায় না, সেটা ওয়ার্ডে ফিরে তারপর বাড়ি ফেরার পথ ধরে।”
ডিসেম্বরের মধ্যে কিছু মৌলিক অর্থনৈতিক সংস্কার করার পরিকল্পনা থাকলেও, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ায় জানুয়ারি পর্যন্ত স্বাভাবিক সংস্কার চালানো যাবে বলে জানান তিনি। তিনি রাজনীতিবিদদের সতর্ক করে বলেন, “যদি সংস্কারের পথে বাধা দেন, তখন এর দায় তাদের সরকারের ওপর পড়বে।”
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, প্রাইভেট সেক্টরের আস্থা ফেরানো এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। নতুন সরকার কী নীতি গ্রহণ করবে তা নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, “বিশ্বের অর্থনীতি অনিশ্চয়তায় ভাসছে, আর ট্রাম্প সবচেয়ে বড় অনিশ্চয়তার কারণ।”
তিনি স্বীকার করেন, অনেক ব্যাংক এখনো আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। এক ব্যাংককে ব্যাপক অর্থ দেওয়া হলেও সেটি গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে সক্ষম হয়নি। ব্যাংক পুনর্গঠনের জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে, তবে নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রকাশ করেননি। তিনি শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলেছেন, “কোনো আমানতকারীর টাকা হারাবে না, প্রত্যেকে তাদের টাকা পাবেন।”
তিনি বলেন, “কিছু ব্যাংক পুনর্গঠনে রাজী নয়, কিন্তু আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। দেশের ৩৫টি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনেকেই আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না, যেখানে পিকে হালদারদের অর্থ আত্মসাতের বিষয়ও রয়েছে।”
সরকার এই এনবিএফআইগুলোর দায় মেটাতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সারসংক্ষেপে, অর্থনীতি ধীরে ধীরে ভালো হওয়ার দিকে এগোচ্ছে, কিন্তু ব্যাংকখাত ও ব্যক্তিগত খাতে আস্থা ফেরানো এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচনের আগে কিছু সংস্কার করা সম্ভব হলেও, রাজনীতি যদি বাধা দেয়, তবে এর দায় সংশ্লিষ্টদেরই নিতে হবে।
সিটিজি পোস্ট/ এসএইচএস