চলতি আগস্ট মাসের মাঝামাঝিতে এসে রাজধানীসহ সারাদেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আবারও ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে। ডিম, চাল, সবজি, পেঁয়াজ, আদা ও এলাচসহ বেশিরভাগ খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ। অনেকে অভিযোগ করছেন, এভাবে দাম বাড়তে থাকলে পরিবারে পুষ্টিকর খাবারের যোগান দেয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর মালিবাগ, খিলগাঁও, কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি ডজন ফার্মের লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা দরে। যেখানে মাসের শুরুতে এই ডিমের দাম ছিল ১২০ টাকা ডজন।
মালিবাগ বাজারের এক দোকানি মফিজুর রহমান জানান, ’মাত্র দুই সপ্তাহ আগেও ডিম বিক্রি করছিলাম ১২০ টাকায়। এখন তা ৩০ টাকা বেড়ে গেছে, কিন্তু তবু ঠিকমতো সরবরাহ পাচ্ছি না।’
মাস দেড়েক ধরে চালের দামও চড়া। মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকার বেশি দামে। মাঝারি মানের মিনিকেট ও নাজিরশাইলের দাম উঠেছে ৬৫-৭০ টাকায়। ভালো মানের ব্র্যান্ডেড চালের দাম ৯০ থেকে ১০০ টাকার কাছাকাছি পৌঁছেছে।
বৃষ্টির কারণে উৎপাদন কমে যাওয়ায় সবজির বাজারেও লেগেছে আগুন। বাজারে ঝিঙা, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, বরবটি, কাঁকরোলসহ বেশিরভাগ সবজিই বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে।
ধরণভেদে বেগুনের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, যা গত মাসের তুলনায় অন্তত ২০ টাকা বেশি।
তবে কিছু পণ্য যেমন আলু ও কাঁচা পেঁপে পাওয়া যাচ্ছে তুলনামূলক কম দামে- ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। ঢ্যাঁড়স, পটল ও মিষ্টিকুমড়া ৬০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে গত দুই সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি বেড়েছে প্রায় ৩০ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা জুবায়ের আলী জানান, ‘পাবনা ও ফরিদপুরে মোকামে পেঁয়াজের প্রতি মণের দাম বেড়েছে প্রায় ৪০০ টাকা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরবরাহ সংকট। ফলে খুচরা বাজারেও দাম লাফিয়ে বাড়ছে।’
আদার কেজি ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে ২২০-২৫০ টাকায় উঠেছে। এলাচের দাম তো আরও চমকে দেয়ার মতো—১০০ গ্রাম এলাচ এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায়, যা আগের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি।
পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজের ভরা মৌসুম শেষ হয়ে আসছে। এরমধ্যে কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যায়ে বিঘ্ন ঘটেছে। বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, বাজারে সরকারের পর্যবেক্ষণ ও নজরদারি দুর্বল হওয়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে মৌসুমি আবহাওয়ার প্রভাবকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিচ্ছেন।