মানিকছড়িতে সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের সমাবেশ: সংঘাত থামিয়ে বিশ্বাস ও ভ্রাতৃত্ব গড়ার আহ্বান
নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
প্রকাশিত হয়েছে: ২৪ নভেম্বর, ২০২৫

খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে দীর্ঘদিনের ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত, অবিশ্বাস ও অনাস্থার অবসান ঘটিয়ে পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হলো সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের এক বিশাল সমাবেশ।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকালে মানিকছড়ি উপজেলা টাউন হলে আয়োজিত এই সমাবেশে পাহাড়ের ১৪টি জাতিসত্তার হাজারো মানুষ অংশ নেন। “মাতৃভূমি জিন্দাবাদ, পার্বত্য চৌদ্দ জাতি দীর্ঘজীবী হোক”—এই স্লোগানে পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে।
সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার থোয়াইচিং মং শাক। তিনি বলেন, “পাহাড়ে আমরা আর কোনো মায়ের বুক খালি হতে দেখতে চাই না। দীর্ঘদিনের ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত ও পারস্পরিক অবিশ্বাস আমাদের পিছিয়ে দিচ্ছে। তাই সংঘাত নয়, সংলাপ ও সম্প্রীতির মাধ্যমে শান্তির পথ তৈরি করতে আমরা পাড়ায় পাড়ায় সচেতনতা ক্যাম্পেইন চালাচ্ছি।”
তিনি আরও জানান, তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতা ছাড়া স্থায়ী শান্তি সম্ভব নয়। সকল জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা এবং সমঅধিকার প্রতিষ্ঠাই তাদের মূল লক্ষ্য।
বক্তারা অভিযোগ করেন, স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনায় পাহাড়ে অস্থিতিশীলতা ও বিভাজন সৃষ্টি হচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য তারা পাহাড়ের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে গিয়ে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতের কুফল সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করছেন এবং শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
সংগঠনের মুখপাত্র পাইশিখই মার্মা বলেন, “আমাদের লক্ষ্য পরিষ্কার—একটি এমন পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়া যেখানে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। ঐক্য ও সচেতনতার মাধ্যমেই আমরা একটি নিরাপদ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ পেতে পারি। এজন্য ছাত্র, যুবকসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষকে আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
সমাবেশে বক্তারা জানান, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে নিয়মিত সংলাপ আয়োজন করে বিদ্যমান অবিশ্বাস দূর করা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ জাগিয়ে তোলাই তাদের প্রধান এজেন্ডা। পাহাড়ে বসবাসরত প্রতিটি নাগরিকের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধায় সমঅধিকার নিশ্চিত করতেও তারা অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
‘ভেদাভেদ ভুলে এক বাংলাদেশ’-এর পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করার আহ্বানের মধ্য দিয়ে সমাবেশের সমাপ্তি ঘটে।
উক্ত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গাজী আনোয়ার, শাহীন আলম, মোবারক হোসেন, কেজো কার্বারি, মনিরুজ্জামান, নাসির উদ্দিন, অনিল কার্বারী ও ইসলাম হোসেন রাফি।
সিটিজিপোস্ট/জাউ




