চট্টগ্রামে নওফেলের বাড়িতে রহস্যজনক আনাগোনা, পুলিশের অভিযানে আটক ০৭
১৩ তারিখ ঘিরে কী চশমা হিলে আকাঁ হচ্ছিল ষড়যন্ত্রের ছক?
নিজস্ব প্রতিবেদক | সিটিজি পোস্ট
প্রকাশিত হয়েছে: ১২ নভেম্বর, ২০২৫

সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা নওফেলের চট্টগ্রামের ২ নম্বর গেইট এলাকার চশমা হিল সংলগ্ন চারতলা বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সাতজনকে আটক করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)।
বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৩ নভেম্বর নিষিদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগের ঘোষিত “ঢাকা লকডাউন” কর্মসূচিকে ঘিরে সম্ভাব্য নাশকতা ও সমন্বয় বৈঠকের তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। আটক ব্যক্তিদের পরিচয় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাঁচ আগস্টের পর নওফেলের এই বাড়িটি দীর্ঘদিন তালাবদ্ধ ছিল। কিন্তু সম্প্রতি হঠাৎ মানুষের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়। মেয়রগলি সংলগ্ন ওই চারতলা বাড়িতে প্রতিদিন নিয়মিত ফুড পার্সেল আসছে, এবং গার্ডদের কার্যক্রমও বদলে গেছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
স্টুডেন্ট এল্যায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি এর আহবায়ক তৌহিদ ইসলাম তাঁর নিজ ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে বলেন “চিটাগং এ লীগের সময় লীগের পাওয়ার হাউজ ছিলো নওফেলের চশমা হিলের বাড়িটা। ৫ আগস্টের পর কয়েকমাস এটা তালাবদ্ধ ছিলো, ইদানীং হঠাৎ করে এই বাড়িতে মানুষের আনাগোনা বাড়তেছে এবং চারতলা বাড়িটা আবার সচল হয়ে উঠছে, সেইসাথে চিটাগং এ লীগের উৎপাতও বাড়তেছে। চশমা হিলের বাড়িটাতে সম্ভবত কোন ছক আঁকা হচ্ছে নতুন করে—নতুবা হঠাৎ করে এত মানুষের আনাগোনা কেন?”
মেয়রগলি দিয়ে রেগুলার আসা যাওয়া করে এরকম একজন কেফায়েত উল্লাহ তৌহিদ ইসলামের পোস্টে মন্তব্য করেন, “প্রায়ই ফুড পার্সেল আসতে দেখি। আগের গার্ডরা এত ফুড অর্ডার করতো না, দুধের গাড়ি ছাড়া অন্য কিছু দেখা যেতো না।”
আবির বিন জাবেদ নামের আরেকজন ফেসবুকে পোস্টে বলেন, “দুই নাম্বার গেইট মেয়র গলির নওফেলের বাসায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও যুবলীগ সন্ত্রাসীরা রেগুলার মিটিং করতেসে। প্রতিদিন প্রচুর খাবার পার্সেল আসে ওই বাসায়। আগামীকাল ১৩ তারিখকে কেন্দ্র করে ওরা বাসায় মিটিং-সিটিং বাড়াচ্ছে প্রচুর।”
উল্লেখ্য, আগামীকাল (১৩ নভেম্বর) ঢাকায় “লকডাউন কর্মসূচি” ঘোষণা করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ। এই কর্মসূচির সমর্থনে ১০ নভেম্বর থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের ঝটিকা মিছিল করতে দেখা গেছে।
ঢাকা পুলিশ কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানিয়েছেন, এসব মিছিল থেকে অগ্নিসংযোগ, বাসে আগুন, ককটেল বিস্ফোরণ ও পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের মতো অন্তত ২৫টি ঘটনা ঘটেছে। শুধু গত ১১ দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৭টি ককটেল বিস্ফোরণ এবং ৯টি যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
চট্টগ্রাম নগরীতেও গত কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগের কর্মীদের ঝটিকা মিছিল দেখা গেছে, এবং বিভিন্ন অভিযানে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে।
ঢাকা ও চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যেই সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচি ঘিরে যে কোনো অস্থিতিশীলতা ঠেকাতে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের যৌথ টহল জোরদার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।
সিটিজিপোস্ট/জাউ



