ফ্রান্সের সাবেক অর্থমন্ত্রী এরিক লম্বার বলেছেন, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণে বিশ্বের মুক্ত বাণিজ্য যুগের শেষ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) প্যারিসে পলিটিকো অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
এরিক লম্বার বলেন, বর্তমান বিশ্বে বাণিজ্য নীতির ভারসাম্য দ্রুত বদলে যাচ্ছে এবং ইউরোপের এখনই জেগে ওঠা উচিত।
তিনি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক আচরণের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “এই দুটি দেশ ধীরে ধীরে মুক্ত বাণিজ্য এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম থেকে সরে যাচ্ছে।”
ইউরোপ যদি এখই ব্যবস্থা না নেয়, তবে নিজেদের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে পড়বে বলে তিনি সতর্ক করেন।
এরিক লম্বার বলেন, “আমেরিকানরা যখন নতুন নতুন দাবি ও চাপ নিয়ে আবার ফিরে এসেছে, তখন আমাদেরও নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় দৃঢ় হতে হবে। প্রয়োজনে ঝুঁকি নিয়ে হলেও।”
তিনি উদাহরণ হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিরোধমূলক বাণিজ্য ব্যবস্থা ব্যবহারের পরামর্শ দেন, যা ইউরোপের অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্ব রক্ষার “শেষ অস্ত্র” হিসেবে বিবেচিত হয়
ব্রাসেলসের পক্ষ থেকে ইউরোপীয় ইস্পাত শিল্প রক্ষায় সম্প্রতি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আমদানি কোটার অর্ধেকে নামানো এবং ৫০% পর্যন্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত এসেছে।
এমন ঘোষণার ঠিক কয়েকদিন পর লম্বার নতুন করে সতর্ক করেন বলেন, “আমার মনে হয়, রসায়ন শিল্পের ক্ষেত্রেও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এটাই হবে পরবর্তী বড় বিষয়।”
দীর্ঘমেয়াদে তিনি একটি “নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা” গঠনের আহ্বান জানান, যা জার্মানির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার ভিত্তিতে গড়ে উঠবে।
তার মতে, ইউরোপকে এখন চীনের কৌশল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। “যেভাবে তারা আমাদের ৪০ বছর ধরে তাদের দেশে বিনিয়োগ করতে এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরে বাধ্য করেছে, আমাদেরও এখন তাদের প্রতি একই কৌশল প্রয়োগ করা উচিত।”
এরিক লম্বারের মতে, ইউরোপের জন্য এখন “আরও জাতীয়তাবাদী এবং সুরক্ষামূলক দৃষ্টিভঙ্গি” প্রয়োজন, যাতে মহাদেশের শিল্প ও উদ্ভাবনকে বিদেশি প্রভাব থেকে রক্ষা করা যায়।
সিটিজিপোস্ট/এমএইচডি