বন্দিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে কারাগারে বিশেষ নিবন্ধন ব্যবস্থা করছে ইসি
নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
প্রকাশিত হয়েছে: ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

নির্বাচন কমিশন বন্দিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে প্রতিটি জেলায় কারাগারভিত্তিক ভোটার নিবন্ধনের বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য সব কারাগারে দুই সদস্যের পৃথক টিম গঠন করা হবে। এই টিমে থাকবেন কারাগারের একজন কর্মকর্তা সাথে একজন কম্পিউটার অপারেটর, যিনি নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
ইসি সূত্র জানায়, সব বন্দি এই প্রয়াসের আওতায় আসবেন না। যারা স্বল্পমেয়াদি বা ৫৪ ধারার মতো অপরাধে কিছুদিন পরে মুক্ত হয়ে যান, তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। শুধু দীর্ঘমেয়াদি সাজাপ্রাপ্ত ও দীর্ঘদিন বিচারাধীন থাকা হাজতিদের নিবন্ধন করা হবে।
কারা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে ৭৪টি কারাগারে প্রায় ৪৬ হাজার বন্দি ধারণক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে ৭০ থেকে ৮০ হাজারের বেশি বন্দি রয়েছে। প্রায় ৭৫ শতাংশ বিচারাধীন হাজতি এবং ২১ হাজারের মতো সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি সেখানে আছেন।
ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ জানান, ইন কান্ট্রি ভোটিংয়ের সুবিধায় সরকারি কর্মকর্তা, নির্বাচনী কর্মকর্তা, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং কারাগারের কয়েদি ও হাজতিরা অংশ নিতে পারবেন। আরপিওতে অন্তর্ভুক্ত না থাকায় এবার সাংবাদিকদের এই সুবিধায় রাখা যাচ্ছে না। তফসিল ঘোষণার পরদিন থেকে কর্মকর্তারা নিবন্ধন শুরু করতে পারবেন এবং কারাগারেও একই সাথে ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে।
দেশের ভেতরের পোস্টাল ব্যালট সরাসরি সংশ্লিষ্ট জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠানো হবে। আর বিদেশ থেকে পাঠানো ব্যালট প্রথমে ঢাকায় এসে পরে জেলা পর্যায়ে পৌঁছাবে।
নির্বাচন কমিশনার আবু ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ জানান, ছয় কারণে পোস্টাল ব্যালট বাতিল হতে পারে। সিল ছাড়া ব্যালট এলে, নির্দিষ্ট প্রতীকে সিল না থাকলে, একাধিক প্রতীকে সিল দেয়া হলে, ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর না থাকলে, ভোটের দিনের শেষ সময়ের মধ্যে ব্যালট না পৌঁছালে এবং প্রতীক বরাদ্দের পর আদালতের রায়ে কোনো প্রার্থী প্রার্থিতা ফিরে পেলে ভোটটি বাতিল হবে। তার ভাষায়, শেষ সময় বলতে ভোটের দিনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ব্যালট হাতে পাওয়া বোঝায়।
ইসি সূত্র আরও জানায়, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি ব্যালটের জন্য তিনটি হস্তান্তর নথি রাখা হবে। একটি ডাক বিভাগে, একটি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এবং একটি নির্বাচন কমিশনে থাকবে। খাম পাওয়ার পরপরই কিউআর কোড স্ক্যান করে ব্যালটের তথ্য কেন্দ্রীয় পোর্টালে যুক্ত হবে। প্রতিটি ব্যালটে থাকবে কোড নম্বর ও বারকোড, যা অনিয়ম শনাক্তে সহায়তা করবে।
এদিকে প্রবাসীদের জন্য সরকারি পোর্টালে নিবন্ধন শুরু হয়েছে গেলো ১৯ নভেম্বর। ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ ৬ লাখের বেশি ডাউনলোড হয়েছে। শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত নিবন্ধিত হয়েছেন ১ লাখ ৮৭ হাজার ৯৭২ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ৬৯ হাজার ২৯১ জন পুরুষ এবং ১৮ হাজার ৬৮১ জন নারী ভোটার।
নিবন্ধনে সৌদি আরব শীর্ষে আছে। সেখান থেকে ৩৫ হাজার ৪৫৬ জন নিবন্ধিত। এরপর যুক্তরাষ্ট্র ১৯ হাজার ১১০ জন, সিঙ্গাপুর ১০ হাজার ৮৫৪ জন, মালয়েশিয়া ১০ হাজার ২৫৯ জন এবং যুক্তরাজ্য ৯ হাজার ৯৬৮ জন।
জেলাভিত্তিক হিসাবে ঢাকা ২৫ হাজার ৯৭১ জন নিয়ে শীর্ষে। এরপর কুমিল্লা ১৮ হাজার ৭৯৭ জন, চট্টগ্রাম ১৪ হাজার ৯৭৭ জন, নোয়াখালী ১১ হাজার ৯১০ জন এবং সিলেট ১১ হাজার ১৮২ জন।
আসনভিত্তিক হিসেবে সবচেয়ে বেশি নিবন্ধন হয়েছে সিলেট ১ আসনে ৩ হাজার ৪৯৬ জন। এরপর নোয়াখালী ১, ফেনী ৩, সিলেট ৬ এবং নোয়াখালী ৩ আসন রয়েছে এগিয়ে।
সিটিজিপোস্ট/এমএইচডি




