বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল (সেভেন সিস্টার্স) সংক্রান্ত মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এক বিবৃতিতে বঙ্গোপসাগরে ভারতের ভূকৌশলগত অবস্থান ও দীর্ঘতম উপকূলরেখার দাবি তুলে ধরেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ড. ইউনূস সম্প্রতি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ‘স্থলবেষ্টিত’ (ল্যান্ডলকড) অঞ্চল হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশকে ওই অঞ্চলের ‘সমুদ্র প্রবেশাধিকারের অভিভাবক’ হিসেবে অভিহিত করেন। তার এ মন্তব্যের ছয় দিন পর ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানালেন।
এক বিবৃতিতে জয়শঙ্কর বলেন, “ভারতের বঙ্গোপসাগরে দীর্ঘতম উপকূলরেখা রয়েছে, যা প্রায় ৬,৫০০ কিলোমিটার বিস্তৃত। আমরা কেবল পাঁচটি বিমসটেক (BIMSTEC) সদস্য দেশের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করি না, বরং তাদের বেশিরভাগকে সংযুক্তও করি। ভারতীয় উপমহাদেশ ও আসিয়ানের মধ্যে সংযোগের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবেও ভারত কাজ করছে।”
তিনি আরও বলেন, “বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিমসটেকের জন্য একটি ‘সংযোগ কেন্দ্র’ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। এখানে সড়ক, রেলপথ, পানিপথ, গ্রিড ও পাইপলাইনের অসংখ্য নেটওয়ার্ক রয়েছে। এ অঞ্চলে অবাধ বাণিজ্য ও মানুষের চলাচলের জন্য সহযোগিতা ও সুবিধা প্রদান অপরিহার্য।”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি চার দিনের চীন সফরে গিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, “ভারতের এই স্থলবেষ্টিত অঞ্চলের সমুদ্রে পৌঁছানোর সরাসরি কোনো উপায় নেই, ফলে বাংলাদেশই তাদের একমাত্র প্রবেশদ্বার।” তিনি আরও ইঙ্গিত দেন যে, এটি চীনের জন্যও এক সম্ভাবনাময় বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি করতে পারে।
ড. ইউনূসের এ বক্তব্য ভারতের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। দেশটির রাজনীতিক, সাবেক কূটনীতিক ও নীতিনির্ধারকরা তার বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন এবং ভারতের ভূকৌশলগত গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছেন।