হিমালয় অঞ্চলে পানি ন্যায্যতা ও নদীর অধিকার নিশ্চিতের আহ্বান
নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
প্রকাশিত হয়েছে: ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান হিন্দুকুশ হিমালয় অঞ্চলে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা জোরদার, নদীর অধিকার রক্ষা এবং আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত ‘হিন্দুকুশ হিমালয়ায় পানি ও জলবায়ু সহনশীলতা’ শীর্ষক সাব-রিজিওনাল কর্মশালায় ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, যুগ যুগ ধরে পানি দেশগুলোর সম্পর্ক জোরদার করলেও দক্ষিণ এশিয়ায় এটি এখনো সবচেয়ে কম ব্যবস্থাপিত যৌথ সম্পদ হিসেবে রয়ে গেছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে জাতিসংঘের পানি কনভেনশনে যুক্ত হয়েছে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, তথ্য বিনিময় ও নদীর ন্যায্য বণ্টনে সক্রিয় সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, পানি কনভেনশন আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে পারে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাড়তে থাকা পানি সংকট মোকাবিলায় সহায়তা করবে।
উজান–ভাটির পারস্পরিক নির্ভরশীলতার বিষয়ে তিনি বলেন, নেপাল, ভুটান ও ভারতের নদীগুলোর অবস্থার সরাসরি প্রভাব পড়ে বাংলাদেশে, কারণ দেশের ৯০ শতাংশ নদী উজান থেকে নেমে আসে। বন্যা, খরা, পলি জমা, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড় ও নদীভাঙন এখন আঞ্চলিক সমস্যা বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
নদী ব্যবস্থাপনায় নীতিমালা থাকলেও বাস্তবায়নের ঘাটতিতে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, কয়েক দশক আগে নির্মিত বাঁধ ও অবকাঠামো নদী ব্যবস্থায় অপূরণীয় ক্ষতি এনেছে। নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে বিবেচনা না করায় অনেক প্রকল্প পরিবেশের বড় ক্ষতি করছে।
তিনি আরও বলেন, নদীর অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রের দায়িত্ব রয়েছে। নদী শুধু সেচ, নৌপরিবহন বা বিদ্যুৎ উৎপাদনের উৎস নয়—এগুলো প্রাণবৈচিত্র্য ও জীবনের ধারক। বাংলাদেশ ও ভারতের আদালতের কয়েকটি রায়ে নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও এর বাস্তবায়নে সরকারি সংস্থাগুলোর জবাবদিহিতা আরও জোরদার করা প্রয়োজন।
আঞ্চলিক পানিবিদ্যুৎ বাণিজ্যকে সহযোগিতার নতুন সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাংলাদেশ–নেপাল পানিবিদ্যুৎ চুক্তি আস্থা ও পরিবেশগত দায়িত্বশীলতার ভিত্তিতে সহযোগিতা বাড়াতে সহায়ক হবে। উজানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতেও ভূমিকা রাখতে পারে।
অনুষ্ঠানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান ড. কল্যাণ রুদ্র, ড. দেবোলিনা কুণ্ডু, অরবিন্দ কুমার; নেপালের সঞ্জীব বরাল; ভুটানের পেমা থিনলে; বাংলাদেশের ড. মো. আবদুল হোসেন এবং ইউথনেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান বক্তব্য দেন।
সিটিজিপোস্ট/জাউ




