বিদেশি কোম্পানির ‘নিউমুরিং টার্মিনাল’ পরিচালনা নিয়ে ২ বিচারপতির ভিন্ন রায়

সিটিজি পোস্ট প্রতিবেদক

অনলাইন ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

বিদেশি কোম্পানির ‘নিউমুরিং টার্মিনাল’ পরিচালনা নিয়ে ২ বিচারপতির ভিন্ন রায়

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে পরিচালনার বৈধতা নিয়ে করা রিট আবেদনের ওপর হাইকোর্টের দুই বিচারপতি ভিন্নমত পোষণ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ বিভক্ত রায় ঘোষণা করা হয়।

বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ফাতেমা নজীব চুক্তি-সম্পর্কিত চলমান প্রক্রিয়াকে অবৈধ ঘোষণা করেন। তবে বেঞ্চের অপর সদস্য বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ার ভিন্নমত প্রকাশ করে রিট আবেদন খারিজের (রুল ডিসচার্জ) রায় দেন।

রায়ের পর অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক জানান, নিয়ম অনুযায়ী বিষয়টি এখন প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হবে। তিনি নতুন একটি বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন, যেখানে বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে। তাঁর মতে, চলমান চুক্তি প্রক্রিয়া চালাতে এখন কোনো আইনগত বাধা নেই।

অন্যদিকে রিট আবেদনকারীর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, জ্যেষ্ঠ বিচারপতি যখন প্রক্রিয়া অবৈধ ঘোষণা করেছেন, তখন চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সরকার এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত বা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে না। প্রধান বিচারপতি একক বেঞ্চ গঠন করলে সেখানেই রিটের চূড়ান্ত রায় হবে।

গত ৩০ জুলাই রিটের প্রাথমিক শুনানিতে হাইকোর্ট রুল জারি করে। পরবর্তী সময়ে এনসিটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে দেওয়ার বিষয়ে স্থিতাবস্থা চেয়ে সম্পূরক আবেদন করেন রিটকারী পক্ষ। ১৯, ২০ ও ২৫ নভেম্বর রুলের ওপর শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণা করা হয়।

রিটের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, আহসানুল করিম ও কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।

বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন এই রিট দায়ের করেন। রিটে বলা হয়, দেশি অপারেটরদের সুযোগ না দিয়ে এবং পিপিপি আইন ও নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে টার্মিনাল পরিচালনার চুক্তি দেওয়া হচ্ছে। কেন এই প্রক্রিয়া অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং কেন ন্যায়সঙ্গত ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং নিশ্চিত করা হবে না—তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।

রুলে নৌসচিব, চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহীকে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল এনসিটি নির্মিত হয় ২০০৭ সালে। নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা ব্যয় হয়। আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের বড় অংশই এই টার্মিনাল দিয়ে পরিবাহিত হয়।

সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ৬ জুলাই রাত ১২টা ১ মিনিটে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড টার্মিনালের নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করে। প্রথমবারের মতো বন্দর টার্মিনাল পরিচালনায় যুক্ত হয় প্রতিষ্ঠানটি।

ক্যাটাগরি:
জাতীয়চট্টগ্রাম