বড় ভূমিকম্পে চট্টগ্রামে লক্ষাধিক প্রাণহানির আশঙ্কা
ঝুঁকিতে নগরীর ৭০–৮০ শতাংশ ভবন
অনলাইন ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
প্রকাশিত হয়েছে: ২২ নভেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম অঞ্চলে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে নগরীর ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ভবন ধসে পড়তে পারে এবং সম্ভাব্য প্রাণহানি লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশের তিনটি প্রধান সক্রিয় টেকটনিক প্লেট ‘বার্মিজ–ইন্ডিয়ান’, ‘বাংলাদেশ–ইন্ডিয়ান’ ও ‘বাংলাদেশ–মিয়ানমার (ইউরেশিয়ান)’ অত্যন্ত নিকটবর্তী হওয়ায় চট্টগ্রামসহ দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চল দীর্ঘদিন ধরেই উচ্চ ভূমিকম্পঝুঁকিতে রয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নগরীতে দীর্ঘদিন ধরে নিয়ম–নীতি না মেনে নির্মিত হাজারো বহুতল ভবন, যা মাত্র ৬০ বর্গমাইলের পুরো নগর এলাকাকে ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭। উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল।
এদিকে চট্টগ্রাম নগরীতে কোনো ক্ষয়ক্ষতির ও দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভূমিকম্পে অনেক বাসিন্দা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের চারদিকে অবস্থানরত সক্রিয় প্লেটগুলো অস্বাভাবিকভাবে গতিশীল। চট্টগ্রাম নগরীর ভূগর্ভেও একটি মাইনর টেকটনিক প্লেট সুপ্ত রয়েছে। প্লেটগুলোর নড়াচড়ার প্রভাবে ২০২১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ২১২ বার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। পাশাপাশি নগরীতে অনুমোদনহীন ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা কয়েক হাজারে পৌঁছেছে। চট্টগ্রামের বহু ভবনের বয়স ৫০ থেকে ১০০ বছর। এগুলোর অন্তত ৭৫ শতাংশই ঝুঁকিপূর্ণ। নতুন নির্মিত অনেক ভবনেও ভূমিকম্প–প্রতিরোধী নকশা নেই। বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে।”
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) জানায়, নগরীতে বর্তমানে ৪ লাখ ১ হাজার ৭২১টি বহুতল ভবন রয়েছে। এর মধ্যে ১৩,৪৮০টি ভবন ৬–১০ তলা ও ৪৮৪টি ভবন ১০ তলার বেশি
অনেক ভবনে জাতীয় বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা হয়নি। উপকূলীয় আবহাওয়ার কারণে নির্মাণসামগ্রী দ্রুত ক্ষয়প্রবণ হওয়া এবং নগরীর সংকীর্ণ সড়কগুলো বড় দুর্যোগে উদ্ধারকাজকে কঠিন করে তুলবে।
গত চার বছরে দেশের ভেতরে ৩৭টি ভূকম্পন ঘটলেও বড় ক্ষতি হয়নি। তবে শুক্রবারের ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প রাজধানী ও চট্টগ্রাম এই দুই স্থানেই বাস্তব ঝুঁকির চিত্র স্পষ্ট করে তুলেছে।




