লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ৩০ বছরের চুক্তি সই করছে চট্টগ্রাম বন্দর ও এপিএম টার্মিনালস

সিটিজি পোস্ট প্রতিবেদক

অনলাইন ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ১২ নভেম্বর, ২০২৫

লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ৩০ বছরের চুক্তি সই করছে চট্টগ্রাম বন্দর ও এপিএম টার্মিনালস

চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছে ডেনমার্কের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান এপিএম টার্মিনালস। বিশ্বের এই বৃহৎ বন্দর ও টার্মিনাল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানটি এপিএম টার্মিনালস ডেনমার্কের বিখ্যাত ম্যারস্ক গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান।

আজ বুধবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, দীর্ঘ আলোচনার পর সরকারের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

বিডা চেয়ারম্যান জানান, টার্মিনাল নির্মাণের জন্য এপিএম টার্মিনালস ২৫০ কোটি টাকা সাইনিং মানি দেবে। প্রকল্পে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, যা সম্পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব অর্থায়নে হবে। এতে সরকারের কোনো ব্যয় হবে না; বরং আগামী তিন বছরে এই অর্থ বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ (FDI) হিসেবে প্রবেশ করবে।

তিনি বলেন, “লালদিয়া টার্মিনাল হবে একটি বিশ্বমানের, স্মার্ট ও গ্রিন পোর্ট, যা সপ্তাহে সাত দিন, ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে। এতে বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ জাহাজ ভিড়তে পারবে এবং বন্দরের সামগ্রিক কর্মক্ষমতা প্রায় ৪০ শতাংশ বাড়বে।”

চৌধুরী আশিক আরো বলেন, “এপিএম টার্মিনালস আমাদের জমিতে জেটি ও টার্মিনাল নির্মাণ করবে এবং সেটি পরিচালনার দায়িত্বও নেবে। তবে মালিকানা থাকবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) হাতে। ৩০ বছর মেয়াদি কনসেশন চুক্তির মেয়াদ শেষে পারফরম্যান্স ভালো হলে সময় বাড়ানো হবে; না হলে টার্মিনাল সম্পূর্ণভাবে বন্দরের কাছে হস্তান্তর করবে।”

প্রকল্পটি রাজস্ব ভাগাভাগি ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। সিপিএ প্রতি কনটেইনারে নির্দিষ্ট ডলারভিত্তিক রাজস্ব পাবে। পাশাপাশি কর, শুল্ক ও সামুদ্রিক সেবা খাত থেকেও সরকারের রাজস্ব আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।

বিডা চেয়ারম্যান জানান, টার্মিনাল চালু হলে বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বছরে ৮ লাখ টিইইউ বাড়বে, যা বর্তমানের তুলনায় প্রায় ৪৪ শতাংশ বেশি। এটি ২০৩০ সালের মধ্যে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, “এটি ইউরোপ থেকে বাংলাদেশের প্রথম বড় প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ, যা দেশের জন্য একটি মাইলফলক। চীন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ার মতো দেশের বন্দর পরিচালনার অভিজ্ঞতা নিয়ে এপিএম টার্মিনালস বাংলাদেশে আসছে। এর ফলে আধুনিক প্রযুক্তি, দক্ষতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত হবে।”

প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বমানের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও পরিবেশ নীতি অনুসরণ করবে, যা দুর্ঘটনা হ্রাস ও কর্মীদের কল্যাণ নিশ্চিত করবে। প্রকল্পের নির্মাণ ও পরিচালনা পর্যায়ে ৫০০ থেকে ৭০০ জনের সরাসরি কর্মসংস্থান হবে। পাশাপাশি লজিস্টিকস, ট্রাকিং, স্টোরেজ ও স্থানীয় এসএমই খাতে হাজারো পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ক্যাটাগরি:
চট্টগ্রামজাতীয়