বান্দরবানের চিম্বুক এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের তিন ম্রো নারীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। রবিবার রাতে সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের ওয়াইজংশন এলাকার রাংলাই ম্রো পাড়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন ওরকান ম্রো (৭১), রাওলেন ম্রো (৪০) এবং তুমলে ম্রো। তাঁরা সুয়ালক রেণিক্ষ্যং মৌজার হেডম্যান এবং সুয়ালক ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রাইলাই ম্রোর আত্মীয়।
বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান, পাড়ার একটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার বিস্ফোরিত হয়ে একটি ঘরে আগুন ধরে যায়। সেখানেই তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের এই তিন নারী সদস্য মারা গেছেন। খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
নিহতদের স্বজন রাইলাই ম্রো জানান, মৃত তিনজনের মধ্যে তাঁর চাচি, চাচাতো বোন এবং চাচাতো ভাইয়ের মেয়ে রয়েছেন। তিনি দুর্ঘটনার বিস্তারিত কারণ এখনও জানতে পারেননি।
সুয়ালক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উক্যনু মারমা জানান, রবিবার রাত ২টার দিকে স্থানীয়রা তাঁকে তিনজনের মৃত্যুর খবর জানান। তবে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় তখন বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব হয়নি।
বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক দিলিপ চৌধুরী জানান, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত এক নারীকে ভোর ৩টা ২০ মিনিটের দিকে হাসপাতালে আনা হলেও পরীক্ষা করে দেখা যায় পথেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গভীর রাতে পাড়ার পাশে একটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণ হয়। তখন একটি ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল। সেগুলোর মিটার ও সংযোগে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ প্রবাহ ছড়িয়ে পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, এই সময় ওই তিন নারী বৈদ্যুতিক মিটার বন্ধ করতে গেলে একে একে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।
এ বিষয়ে বান্দরবান বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক আমির হোসেন বলেন, "ট্রান্সফরমার নষ্ট হলে বিদ্যুৎ থাকার কথা নয়। যে মুহূর্তে ট্রান্সফরমার নষ্ট হবে, সে মুহূর্তেই বিদ্যুৎ চলে যাবে। এ ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।"
চিম্বুক পাহাড়ে ওয়াইজংশনের রাংলাই ম্রো পাড়া বান্দরবান শহর থেকে ১৮ থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং এটি মূলত ম্রো সম্প্রদায়ের বাসস্থান। ওয়াইজংশন এলাকা থেকে একদিকে রুমা এবং অপরদিকে থানচি রাস্তা চলে যাওয়ায় এলাকাটি ওয়াইজংশন রাংলাই ম্রো পাড়া নামে পরিচিত।