মিরসরাই ট্র্যাজেডির ১৪ বছর- যে ঘটনায় কেঁদেছিল সারাদেশ!

সিটিজি পোস্ট প্রতিবেদক

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ১১/৭/২০২৫, ৫:৫৪:০৩ AM

মিরসরাই ট্র্যাজেডির ১৪ বছর- যে ঘটনায় কেঁদেছিল সারাদেশ!


টগবগে তরুণ হয়ে ওঠার আগেই ঝরে যায় ৪৫টি তাজা প্রাণ- যাদের মধ্যে ছিল ৪৩ শিশু শিক্ষার্থী। পড়াশোনা শেষ করে কর্মজীবনে প্রবেশ, সংসারের হাল ধরা কিংবা বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটানোর আগেই এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় থেমে যায় তাদের পথচলা। ২০১১ সালের ১১ জুলাই দুপুরে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ঘটে সেই ভয়াল ট্র্যাজেডি- যা একসাথে কাঁদিয়েছিল পুরো দেশকে।

download (2)

সেদিন একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা শেষে মিরসরাই উপজেলা স্টেডিয়াম থেকে পিকআপযোগে বাড়ি ফিরছিল শিশুরা। আবু তোরাব সড়কের সৈদালী এলাকায় পৌঁছালে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে ট্রাক উল্টে পড়ে রাস্তার পাশের ডোবায়। এতে ডুবে যায় পিকআপে থাকা অধিকাংশ শিক্ষার্থী। মুহূর্তেই নিভে যায় ৪৫টি প্রদীপ, যার মধ্যে ৪৩ জনই শিশু।

নিহত শিক্ষার্থীদের বাড়ি মিরসরাই উপজেলার মায়ানী ও মঘাদিয়া এলাকায়। তাদের মধ্যে ৩৪ জনই ছিল মায়ানী ইউনিয়নের আবু তোরাব উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র। বাকি শিক্ষার্থীরা একই ইউনিয়নের ১১টি গ্রামের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। কেউ ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়, কেউ চিকিৎসাধীন অবস্থায় কয়েক দিন পর মারা যায়।

WhatsApp Image 2025-07-11 at 4.01.14 AM

স্বাধীনতার পর এত বিপুল সংখ্যক শিশুর একসাথে মৃত্যুর ঘটনা বাংলাদেশে আর কখনো ঘটেনি। এই দুর্ঘটনায় শোকাহত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ায় পুরো জাতি। স্থানীয়ভাবে নির্মিত হয় দুটি স্মৃতিস্তম্ভ- দুর্ঘটনাস্থলে ‘অন্তিম’ ও আবু তোরাব উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে ‘আবেগ’- যা আজও স্মরণ করিয়ে দেয় হারানোর বেদনা।

WhatsApp Image 2025-07-11 at 4.00.56 AM

স্মৃতিস্তম্ভ দুটি এখনো সাক্ষ্য দেয় সেই ভয়ানক দিনের। শিশুরা আর কখনো ফিরে আসবে না, তবে তাদের স্মৃতি রয়েছে স্কুলের বারান্দায়, ফুটবল মাঠে আর মায়ের চোখে।

তৎকালীন সময়ে নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবার ও সহপাঠীদের ট্রমা কাটিয়ে তুলতে মনোবিদ নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘ সময় লেগেছে পরিবার ও শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে।

দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো শিক্ষার্থীদের একজন ছিল আবু তোরাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সাখাওয়াত হোসেন। তার মা নাজমা আক্তার এখনো ছেলের কথা মনে করে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

তিনি বলেন, ‘সেদিন ছেলের মৃত্যুর সাথে সাথে আমার সব স্বপ্নেরও মৃত্যু হয়ে গেছে। বেঁচে থাকলে আমার ছেলে আজ টগবগে তরুণ থাকত। কিন্তু ছেলেটার বয়স তো আর বাড়ল না। যে ছেলে আমার অবলম্বন হতো, তার স্মৃতি হাতড়ে এখন দিন কাটে আমার। এ দুঃখ থেকে আমার আর মুক্তি নেই এ জীবনে।’

এই শোক, এই বেদনা কোনো পরিবারের জন্যই কেবল নয়- পুরো জাতির জন্য। মিরসরাইয়ের সেই ট্র্যাজেডি আজো মনে করিয়ে দেয় নিরাপত্তা অবহেলার মূল্য কতটা ভয়াবহ হতে পারে।

ক্যাটাগরি:
জাতীয়চট্টগ্রাম উত্তর

জাতীয় ক্যাটাগরি থেকে আরো

এসএসসিতে দেশসেরা নরসিংদীর ‘নাছিমা কাদির মোল্লা স্কুল’

এসএসসিতে দেশসেরা নরসিংদীর ‘নাছিমা কাদির মোল্লা স্কুল’

১১ জুলাই, ২০২৫

২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ১০০ শতাংশ জিপিএ ৫ পেয়ে দেশসেরা ফলাফল করেছে নরসিংদীর ‘নাছিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুল অ্যান্ড হোমস’। এ বছর প্রতিষ্ঠানটির ৩২০ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পেয়েছে সর্বোচ্চ ফলাফল, এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রধান শিক্ষক মো. ইমন হোসেন।বিভিন...