রাঙামাটির প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে আইনি জটিলতার কারণে গত পাঁচ বছর ধরে নতুন শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। এতে সহকারী ও প্রধান শিক্ষকের হাজারের বেশি পদ শূন্য পড়ে আছে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পাশাপাশি দায়িত্বশীল শিক্ষকরা অতিরিক্ত চাপের মুখে পড়েছেন এবং তরুণরা চাকরির সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন।
রাঙামাটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হৃষীকেশ শীল জানান, ২০২০ সাল থেকে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। জেলার ৭০৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী থাকলেও সহকারী শিক্ষকের ৬০২টি ও প্রধান শিক্ষকের ৩৭৩টি পদ শূন্য রয়েছে। শূন্য পদ প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তি অনুযায়ী, প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের হাতে হস্তান্তর করা হয়। স্থানীয় আইন অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্ব জেলা পরিষদের। আগে চাকরিতে বয়সসীমা ছিল ৪০ বছর, ২০২০ সালে তা কমিয়ে ৩০ বছর করা হলে অসন্তোষ তৈরি হয়। বিষয়টি আদালতে গেলে নিয়োগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
বরকলের ধামাইছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমল চাকমা বলেন, “শিক্ষকের সংকটে অবস্থা খুবই করুণ। দুর্গম এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে একটি বা দুটি শিক্ষক দিয়ে পুরো স্কুল চালাতে হচ্ছে।”
গবেষক তনয় দেওয়ান মনে করেন, এই সংকট শিক্ষাক্ষেত্র ছাড়াও সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতি করছে। “যদি এক হাজার শিক্ষক নিয়োগ হতো, অনেক পরিবার জীবিকা ও আশ্রয় পেত,” তিনি বলেন।
রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার জানান, “মামলাটি নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে, তবে প্রক্রিয়ায় দেরি হচ্ছে।”