শেরপুরের শ্রীবরদীতে পক্ষাঘাতগ্রস্ত স্ত্রীকে জ্যান্ত কবর দেওয়ার চেষ্টা করে আলোচনায় আসা বৃদ্ধ খলিলুর রহমান ঘটনার জন্য অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি এটিকে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল বলে স্বীকার করেছেন।
গত শুক্রবার শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খোশালপুর কানিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা খলিলুর রহমান (৭৫) বাড়ির উঠানে স্ত্রী খোশেদা বেগমকে (৬৫) কবর দেওয়ার জন্য গর্ত খনন করেন। পরে ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে জ্যান্ত কবর দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় প্রতিবেশীরা গিয়ে তাকে থামান। ঘটনার ভিডিও তার নাতি মো. খোকন ফেসবুকে প্রকাশ করলে তা ভাইরাল হয়।
ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শনিবার ঘটনাস্থলে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ওসি ও প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা। পরিস্থিতি খারাপ দেখে খলিলুর রহমান সটকে পড়েন এবং রাতে বাড়ি ফেরেননি। রোববার সকালে তিনি ফিরে এসে স্ত্রী ও সবার কাছে ক্ষমা চান।
খলিলুর রহমান জানান, “১৫ বছর ধরে একাই ওরে (স্ত্রীকে) টানতাছি। ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি কেউ সাহায্য করে না। কমোড চেয়ার কিনে দিছি, কিন্তু বসে না। গত শুক্রবার তিনবার বিছানায় মলত্যাগ করছে। সহ্য করতে না পাইরা রাগের মাথায় কবর দিবার চাইছিলাম। আমার কষ্ট কেউ বুঝে না। যে সেবা করে সে-ই বোঝে, বছরের পর বছর ধইরা কি কষ্ট করছি।”
ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর খোশেদা বেগমের জন্য নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সহানুভূতি জাগে। অনেকেই অর্থ সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসেন। রোববার দুপুরে শেরপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদুল হক রুবেল বিএনপি নেতা তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা দেন। মহিলা দল, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতারাও অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। একই দিন বিকেলে মানিকগঞ্জ দরবার শরীফের পীর শায়খ হযরত মাওলানা মুফতি ড. মুহাম্মদ মনযুরুর ইসলাম ছিদ্দিকীর পক্ষ থেকেও ১০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়।
কাকিলাকুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হামিদুল্লাহ বলেন, “খলিলুর রহমান ঘটনার জন্য ভীষণ অনুতপ্ত। দীর্ঘদিন অসুস্থ স্ত্রীকে সেবা করতে করতে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। ঘটনার দিন মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। তার নাতিসহ পরিবারের অন্য কেউ এগিয়ে আসেনি, বরং ভিডিও করেছে এটাও দুঃখজনক।”
সিটিজি পোস্ট/ এসএইচএস