বাংলাদেশ বর্তমানে এক সংকটময় মুহূর্ত অতিক্রম করছে। দেশ কোন পথে এগোবে, তা নির্ভর করছে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের ওপর। এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।

সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীতে জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত আনসার-ভিডিপির ভোটকেন্দ্র নিরাপত্তা মহড়া ও আনসার কোম্পানি-প্লাটুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

সিইসি বলেন, “জাতি হিসেবে, দেশ হিসেবে আমরা কোন দিকে যাব, কীভাবে এগোব, সবকিছুই আগামী নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে।”

উপস্থিত আনসার সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা বাহিনীর সদস্য হলেও একই সঙ্গে এই দেশের নাগরিক। নাগরিক হিসেবে দেশের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি, কিন্তু নাগরিক হিসেবেও ভাবি—ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা কেমন বাংলাদেশ রেখে যাচ্ছি, তা নিয়ে উদ্বেগ আছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমি এই দায়িত্ব রুটিন কাজ হিসেবে নিইনি; এটি একটি মিশন ও চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। বিশেষ করে দেশের বর্তমান সংকটময় সময়ে আমাদের গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে বাস্তবসম্মত সমাধান খুঁজতে হবে।”

সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সবার সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয় উল্লেখ করে সিইসি বলেন, “শুধু নিয়ম মেনে কাজ করলে চলবে না; প্রয়োজন হলে প্রথার বাইরে গিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আজকের এই প্রশিক্ষণও প্রচলিত প্রশিক্ষণ থেকে আলাদা।”

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার নিয়ে সতর্ক করে তিনি বলেন, “দুষ্টচক্র এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে, নির্বাচনে দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সবাই যাচাই-বাছাই করে সচেতন থাকবেন।”

একই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ জানান, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় পাঁচ লাখ আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে।

তিনি বলেন, “১ লাখ ৪৫ হাজার নতুন আনসার সদস্যকে মৌলিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যা ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। শুধু নির্বাচনী দায়িত্ব নয়, ভোটারদের সচেতন করতেও মাঠে কাজ করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “ভোটে এবার নানা চ্যালেঞ্জ আছে, তবে বাহিনী তা মোকাবিলায় প্রস্তুত।”

সিটিজিপোস্ট/জাউ