দীর্ঘ দুই বছর ধরে চলমান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল সংঘাতের অবসান ঘটাতে বড় পদক্ষেপ হিসেবে আজ শুক্রবার (১০ অক্টোবর, ২০২৫) যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে ইসরায়েলি সরকার। এই চুক্তির ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পথ খুলেছে। এরপরের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।
চুক্তিটি অনুমোদনের কথা জানিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে বলা হয়, “সরকার এইমাত্র জীবিত ও মৃত সব জিম্মিকে মুক্তির বিষয়ে চুক্তির কাঠামো অনুমোদন করেছে।”
মধ্যস্থতাকারীরা চুক্তির বিষয়ে সমঝোতার ঘোষণা দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর আজ সকালে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা এটি অনুমোদন করে। চুক্তির আওতায় ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে। এছাড়া ইসরায়েল ধাপে ধাপে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করবে।
ইসরায়েল সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভার অনুমোদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। এরপরের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জীবিত জিম্মিদের মুক্তি এবং পর্যায়ক্রমে মৃতদের মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
গাজায় বর্তমানে ২০ জন ইসরায়েলি জিম্মি জীবিত এবং ২৬ জন নিহত বলে ধারণা করা হচ্ছে। আরও দুজনের বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। হামাস জানিয়েছে, জীবিতদের মুক্তি দিতে প্রস্তুত থাকলেও নিহতদের মরদেহ উদ্ধারে কিছুটা সময় লাগতে পারে।
এদিকে চুক্তির খবরে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের জনগণের মাঝে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটি দীর্ঘদিন ধরে চলা সংঘাত নিরসনে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।
হামাসের নির্বাসিত গাজাপ্রধান খলিল আল-হাইয়া জানান, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে তাঁরা যুদ্ধের স্থায়ী অবসানের ব্যাপারে আশ্বাস পেয়েছেন।
এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বুধবার ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে জানান, গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিমুক্তি সংক্রান্ত তাঁর ২০ দফা পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ইসরায়েল ও হামাস একমত হয়েছে। তিনি লেখেন, “আমি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছি, ইসরায়েল ও হামাস উভয়ে আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে সই করেছে।”
উল্লেখ্য, দীর্ঘ দুই বছরের সংঘাতে গাজায় এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বিপুল সংখ্যক মানুষ গৃহহীন হয়ে বিভিন্ন শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে অবরুদ্ধ গাজায় খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসামগ্রী বহনকারী সহায়তাপ্রাপ্ত ট্রাক প্রবেশ করতে পারবে।
সিটিজিপোস্ট/জাউ