ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার রেশ ধরে ইরানে বসবাসরত লাখো আফগান নাগরিকের জন্য পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়ে উঠেছে। গুপ্তচরের অভিযোগে সন্দেহভাজন করে এবং জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে গত কয়েক সপ্তাহে ইরান থেকে বিপুল সংখ্যক আফগানকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
৩৫ বছর বয়সী এনায়েতুল্লাহ আজগারি—একজন আফগান নির্মাণ শ্রমিক—রয়টার্সকে জানান, “ইরানে এখন জায়গা পাওয়া কষ্টকর, কাজ নেই, আর আফগানদের প্রতি সবাই শত্রুতা দেখায়।”
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার তথ্যমতে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩০ হাজার আফগানকে ফেরত পাঠাচ্ছে ইরান, যা পূর্ববর্তী তুলনায় ১৫ গুণ বেশি।
ইরান সরকারের মুখপাত্র ফাতেমা মোহাজেরানি বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তাই এখন অগ্রাধিকার। অবৈধ অভিবাসীদের অবশ্যই দেশে ফিরতে হবে।” তবে আফগানদের গুপ্তচর অভিযানের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
জাতিসংঘের আফগানিস্তান প্রতিনিধি আরাফাত জামাল এই পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক উল্লেখ করে বলেন, “আফগানদের বলির পাঁঠা বানানো হচ্ছে।” একই সঙ্গে আফগানিস্তানে সাহায্য কমে যাওয়ায় ফিরিয়ে আনা মানুষের মানবিক চাহিদা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে জাতিসংঘ।
২০২৫ সালের প্রথমার্ধেই ইরান ও পাকিস্তান থেকে ফেরত এসেছে প্রায় ১২ লাখ আফগান নাগরিক, যাদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকলেও হয়রানি ও গ্রেপ্তারের শিকার হতে হয়েছে।
জাতিসংঘ আশঙ্কা করছে, ইরানের এই কঠোর অবস্থান আফগানিস্তানের ভঙ্গুর অর্থনীতি ও মানবিক সঙ্কটকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে।