ব্রিটেনের ‘এফবিআই’ খ্যাত NCA-এর একজন মুখপাত্র আল জাজিরার তদন্তকারী ইউনিট (আই-ইউনিট)-কে বলেন, “আমরা নিশ্চিত করতে পারি, এনসিএ চলমান বেসামরিক তদন্তের অংশ হিসেবে বেশ কিছু সম্পত্তির বিরুদ্ধে জব্দের আদেশ পেয়েছে।”

জব্দ মানে, সাইফুজ্জামান এখন তার ব্রিটিশ সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারবেন না।

আল জাজিরার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ৫৬ বছর বয়সী সাইফুজ্জামান লন্ডন, দুবাই ও নিউইয়র্কে বিভিন্ন নামে ৫০ কোটিরও বেশি মার্কিন ডলারের সম্পদ গড়ে তুলেছেন।

তবে তার বাংলাদেশের আয়কর রিটার্নে এসব সম্পদের কোনো তথ্য নেই।

লন্ডনের সেন্ট জনস ওঠে একটি বিলাসবহুল বাড়ি – যার মূল্য প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার।

বাড়িটির অভ্যন্তর ভিডিও ধারণ করেছিলেন আল জাজিরার গোপন সাংবাদিক।

আই-ইউনিটের মতে, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, দেশ থেকে বছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার পাঠানোর অনুমতি থাকলেও সাইফুজ্জামান সে সীমা বহু গুণ অতিক্রম করেছেন।

চট্টগ্রামের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান হিসেবে, তিনি মন্ত্রী থাকা অবস্থায় বিদেশে বিপুল সম্পদ বিনিয়োগ করেন।

তিনি ব্যয়বহুল স্যুট ও কুমিরের চামড়ার ডিজাইনার জুতা কেনার শখের কথা নিজেই জানান এক সাক্ষাৎকারে।

এ সময় তিনি বলেন, “আমি আসলে শেখ হাসিনার ছেলের মতো। তিনি জানেন, এখানে (লন্ডনে) আমার ব্যবসা আছে।”

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমানে লন্ডনে সফররত। তার চ্যাথাম হাউজে বক্তব্য ও নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকের দিনেই সাইফুজ্জামানের সম্পত্তি জব্দের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লব ও গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান।

এরপরই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক সরকারের মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে।

সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই তদন্তের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে।

এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অপরাধ তদন্তে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক হতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের।

যুক্তরাজ্য এতটা জোরালো পদক্ষেপ সাধারণত গৃহীত দেশগুলোর সঙ্গে গভীর তথ্য ও কূটনৈতিক আস্থার ভিত্তিতেই নেয়।