সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের একটি বক্তব্য বিকৃত করে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
সোমবার (৬ অক্টোবর) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানায়, গেলো ৩০ সেপ্টেম্বর বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান কার্যক্রমে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর কার্যক্রম আরও উন্নত ও গতিশীল করার উপায় নিয়ে আয়োজিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপনা (স্টাডি পিরিয়ড) অনুষ্ঠানে সেনা সদস্যদের দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মোতায়েন এবং সেই প্রক্রিয়ার নানা চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে In Aid to Civil Power-এর আওতায় প্রযোজ্য বাংলাদেশ দণ্ডবিধি (CrPc) ১২৭-১৩২ ধারা এবং সেনাবাহিনীকে প্রদত্ত ‘ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা’ আরোপের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। মূল উদ্দেশ্য ছিল মাঠে নিয়োজিত সেনাদল যেন আইনগত, প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে দায়িত্ব সঠিক ও পেশাদারভাবে পালন করতে পারে।
বিবৃতিতে বলা হয়, অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে CrPc ১৩২-এ প্রদত্ত দায়মুক্তি (Indemnity) নিয়ে আলোচনা হয় এবং সেনাপ্রধান সেখানে উল্লেখ করেন যে, এই দায়মুক্তির বিধান ও International Crimes (Tribunals) Act, 1973 (সংশোধিত ২০২৪)-এর মধ্যে সাংঘর্ষিক অবস্থান থাকতে পারে। তিনি বলেন, সরকারি আদেশে দায়িত্ব পালনরত সেনা সদস্যরা আইন অনুযায়ী বেআইনি জনসমাগম ছত্রভঙ্গ করতে পারেন; তাই তাদের আইনগত সুরক্ষা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে সেনাবাহিনী ইতিমধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছে।
তবে আইএসপিআর জানিয়েছে, আলোচনার কোনো পর্যায়েই সেনাপ্রধান গুম-খুন বা মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত কাউকে দায়মুক্তি দেওয়ার কথা বলেননি। তবুও একটি চিহ্নিত কুচক্রী মহল, বিশেষ করে বিদেশে অবস্থানরত কিছু ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যে সেনাপ্রধানের বক্তব্য বিকৃত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন। এতে তারা দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর সাথে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ও দূরত্ব তৈরির অপচেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় সংবিধান, রাষ্ট্রের আইন ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে পেশাদারিত্ব ও শৃঙ্খলার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখবে।
আইএসপিআর জনসাধারণকে আহ্বান জানিয়েছে, সেনাপ্রধানের বক্তব্য বিকৃতি করে প্রচারিত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য থেকে সতর্ক থাকতে এবং এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হতে।
সিটিজিপোস্ট/এমএইচডি