পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা, সিপিইসি সম্প্রসারণসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইসহাক দার বলেন, ‘আজ আমরা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ আলোচনা করেছি।’
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর (এফও) জানিয়েছে, ওয়াং ই পাকিস্তান-চীন ষষ্ঠ কৌশলগত সংলাপে অংশ নিতে বুধবার রাতে ইসলামাবাদে পৌঁছান। সকালে তিনি ইসলামাবাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান ইসহাক দার নিজেই। এর আগে পাকিস্তানের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত সফর করেন চীনের এই কূটনীতিক।
চীন ও পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের কৌশলগত অংশীদারত্ব বাণিজ্য, জ্বালানি, প্রতিরক্ষা ও অবকাঠামোসহ নানা ক্ষেত্রে বিস্তৃত। গত বছরের মে মাসে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত পঞ্চম কৌশলগত সংলাপে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেছিলেন ইসহাক দার ও ওয়াং ই। এবারের বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাস দমন, সিপিইসি সম্প্রসারণ ও নতুন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
ওয়াং ই ইসলামাবাদ পৌঁছানোর আগের দিন কাবুলে অনুষ্ঠিত হয় ষষ্ঠ ত্রিপক্ষীয় বৈঠক। এতে অংশ নেন ইসহাক দার, ওয়াং ই ও আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। সেখানে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা, সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপ, বাণিজ্য এবং সিপিইসি আফগানিস্তান পর্যন্ত সম্প্রসারণে অঙ্গীকার হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত মাসে পাকিস্তান ও চীন যৌথভাবে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালুর ঘোষণা দেয়, যা বাস্তবায়িত হবে সিপিইসি-২-এর অধীনে। এ কর্মসূচির আওতায় নির্মাণ প্রকৌশল, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কৃষি ও হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এ মাসের শেষে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে বেইজিং যাবেন। সফরের ফাঁকে তাঁর চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
সরকার জানিয়েছে, এই সফর থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে সিপিইসি-২, যার মূল লক্ষ্য শিল্প খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি। প্রায় পাঁচ বছর বিলম্বের পর এ উদ্যোগ বাস্তবায়নের পথে।