প্রচার-প্রচারণা শেষে প্রার্থীদের অপেক্ষা ভোটারদের রায়ের
আগামীকাল ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন। টানা প্রচার-প্রচারণা শেষ করে প্রার্থীরা এখন অপেক্ষা করছেন ভোটারদের রায়ের। আশা করা হচ্ছে, এবারের নির্বাচনে পূর্বের তুলনায় ভোটার উপস্থিতি বেশি হবে। সবার দৃষ্টি নিবদ্ধ ডাকসুর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিন পদ—ভিপি, জিএস ও এজিএসের দিকে।
যদিও এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্বাচন, তবে ডাকসুকে ঘিরে আগ্রহ ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। শিক্ষার্থী, সাবেক শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষও কৌতূহলী হয়ে তাকিয়ে আছেন কারা আগামী দিনের নেতৃত্বে আসবেন।
পদ ও প্রার্থীসংখ্যা
ডাকসুর মোট পদ ২৮টি। এর মধ্যে ১৩ সম্পাদক, ১০ কার্যকরী সদস্য এবং আলোচিত তিন পদ ভিপি, জিএস ও এজিএস। ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৫ জন, জিএস পদে ১৯ জন এবং এজিএস পদে ২৮ জন প্রার্থী।
ভিপি পদে আলোচিত প্রার্থীরা
ভিপি পদে আলোচনায় রয়েছেন শিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের আবু সাদিক (কায়েম), স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী জোটের উমামা ফাতেমা, ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংসদের আবদুল কাদের, সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদের মো. জামাল উদ্দিন খালিদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের বিন ইয়ামিন মোল্লা, বামজোটের প্রতিরোধ পর্ষদের শেখ আফরোজা তাসনিম (ইমি) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন।
জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা
জিএস পদে শুরুতে আলোচনায় আসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আশিকুর রহমান। তার অনলাইনভিত্তিক প্রচারণা ও ইশতেহার শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। তবে বর্তমানে বেশি আলোচিত হচ্ছেন ছাত্রদলের শেখ তানভীর বারী হামিম, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের আবু বাকের মজুমদার, শিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের এস এম ফরহাদ এবং বামজোটের প্রার্থী মেঘমল্লার বসু।
এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা
এজিএস পদে এগিয়ে আছেন বাগছাস নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিদ আল মুদাসসির। এছাড়া আলোচনায় রয়েছেন শিবির-সমর্থিত মহিউদ্দিন খান, ছাত্রদলের তানভীর আল হাদী মায়েদ, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের আশরেফা খাতুন, বামজোটের জাবির আহমেদ জুবেল এবং সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদের ফাতেহা শারমীন (এ্যানি)।
জরিপের চিত্র
ডাকসু নির্বাচন ঘিরে কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম জরিপ পরিচালনা করেছে।
ন্যারেটিভ প্ল্যাটফর্মের জরিপে দেখা যায়, ভিপি পদে আবু সাদিক কায়েম এগিয়ে আছেন ৪২ শতাংশ সমর্থন নিয়ে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শামীম হোসেন ১৬.৫ শতাংশ, আবিদুল ইসলাম খান ১৪ শতাংশ, উমামা ফাতেমা ৯ শতাংশ এবং আবদুল কাদের ৮ শতাংশ সমর্থন পান।
একই জরিপে জিএস পদে এস এম ফরহাদ ৩২.৫ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন। ছাত্রদলের শেখ তানভীর বারী হামিম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আরাফাত চৌধুরী সমানভাবে ১৬ শতাংশ করে সমর্থন পান। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের আবু বাকের মজুমদার পান প্রায় ১৪ শতাংশ এবং মেঘমল্লার বসুর পক্ষে ছিল ৯ শতাংশ সমর্থন।
এজিএস পদে মহিউদ্দিন খান শীর্ষে আছেন ৫৩ শতাংশ ভোট নিয়ে। তার পরেই তানভীর আল হাদী মায়েদ ১৬ শতাংশ, আশরেফা খাতুন ৯ শতাংশ এবং জাবির আহমেদ জুবেল ও ফাতেহা শারমীন (এ্যানি) ৪ শতাংশ করে সমর্থন পান। বাকিরা মোট ১৪ শতাংশ সমর্থন ভাগ করে নেন।
সোচ্চার প্ল্যাটফর্মের জরিপে কেবল ভিপি পদকে কেন্দ্র করে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে শিবির-সমর্থিত প্রার্থী পান ৩২ শতাংশ সমর্থন, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ২২ শতাংশ এবং ছাত্রদল মাত্র ৭ শতাংশ।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ পাবলিক একাডেমির জরিপে একেবারেই ভিন্ন চিত্র উঠে আসে। সেখানে শিবিরের প্রার্থী আবু সাদিক কায়েম মাত্র ৯ শতাংশ সমর্থন পান।ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান শীর্ষে উঠে আসেন ৪৬ শতাংশ ভোট নিয়ে। দ্বিতীয় স্থানে আছেন আবদুল কাদের, যার সমর্থন ছিল ১৮ শতাংশ। আর উমামা ফাতেমা পান ১২ শতাংশ ভোট।
জরিপ নিয়ে বিতর্ক
এই জরিপগুলোকে ঘিরে প্রার্থীদের মধ্যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। ভিপি প্রার্থী আবদুল ওয়াহেদ বলেন, “এসব জরিপ আসলে ভুয়া ও পক্ষপাতমূলক। নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের স্বার্থে এগুলো করা হয়। স্যাম্পল সাইজ ও পদ্ধতি দেখলেই বোঝা যায়, এগুলো মাঠে ছাড়ার উদ্দেশ্য কেবল অন্যদের দুর্বল করা।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বোরহান উদ্দিনের মতে, “এসব জরিপ বস্তুনিষ্ঠ নয়। এবার প্রার্থীর সংখ্যা এত বেশি যে, আগাম অনুমান করা প্রায় অসম্ভব।”
সব মিলিয়ে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেমন উৎসাহ-উদ্দীপনা রয়েছে, তেমনি বিরাজ করছে অনিশ্চয়তাও।
জরিপগুলো ভিন্ন ভিন্ন ফলাফল তুলে ধরলেও এগুলোর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে শিক্ষার্থী ও প্রার্থীদের মধ্যেই।
শেষ পর্যন্ত আগামীকাল ৯ সেপ্টেম্বরের ভোটই নির্ধারণ করবে কারা হচ্ছেন ডাকসুর ভিপি, জিএস ও এজিএস।
সিটিজি পোস্ট/ জেইউ
৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
ডাকসুতে উৎসবমুখর পরিস্থিতে ভোটগ্রহণ চলছে । আজ (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে ৮টায় সাংবাদিকদের সামনে ভোটের বাক্স সিলগালা করা হয়। এরপর ৮টা ৭ মিনিট থেকে ভোটারদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয় এবং ৮টা ১০ মিনিট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আটটি কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে মোট ৮১০টি বুথে ভোটগ্রহণ চ...
৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
ডাকসুতে উৎসবমুখর পরিস্থিতে ভোটগ্রহণ চলছে । আজ (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে ৮টায় সাংবাদিকদের সামনে ভোটের বাক্স সিলগালা করা হয়। এরপর ৮টা ৭ মিনিট থেকে ভোটারদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয় এবং ৮টা ১০ মিনিট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্প...