যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের পার্ক অ্যাভিনিউতে এক বন্দুকধারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের (এনওয়াইপিডি) কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামসহ অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। পরে বন্দুকধারী নিজেই গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে নিশ্চিত করেছে এনওয়াইপিডি।
নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম (৪১) নিউইয়র্ক সিটিতে প্রায় এক দশক ধরে পুলিশ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন। তাঁর এই আকস্মিক মৃত্যুতে নিউইয়র্কের প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (২৮ জুলাই) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে। নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়, ২৭ বছর বয়সী হামলাকারী শেন ডেভন তামুরা, যিনি লাস ভেগাসের বাসিন্দা, পার্ক অ্যাভিনিউয়ের ৩৪৫ নম্বর বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকেন। ভবনের লবিতে প্রথম গুলির শব্দ শোনা যায়, যেখানে পুলিশের সঙ্গে তার গোলাগুলি হয়।
পরে তিনি বিল্ডিংয়ের ৩৩ তলায় উঠে যান এবং কিছুক্ষণ পর ভবনের সিঁড়িতে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার হাতে একটি রাইফেল পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সে আত্মঘাতী গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
ঘটনার পরপরই নিউইয়র্ক পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ জানান, “হামলাকারী একাই ছিল এবং বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
সন্ধ্যা সাতটার কিছু আগে পুলিশ পার্ক অ্যাভিনিউ ও ইস্ট ৫১তম স্ট্রিট এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়। একই সময়ে নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস এক বিবৃতিতে বলেন, “নিউইয়র্কবাসী, মিডটাউন এলাকায় একটি সক্রিয় গুলির ঘটনা চলছে, সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।”
বন্দুক হামলার সময় বিল্ডিংয়ের ভেতরে থাকা এনএফএল, ব্ল্যাকস্টোন ও জেপি মরগান চেজের করপোরেট অফিসগুলোতে কর্মরত লোকজনকে জানানো হয়, “কেউ বের হবেন না, নিরাপদ স্থানে অবস্থান করুন।” এসময় ভবন এলাকা ঘিরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও জরুরি সেবা কর্মী মোতায়েন করা হয়।
এফবিআইয়ের নিউইয়র্ক ফিল্ড অফিস ও সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট অব নিউইয়র্ক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করছে বলে জানা গেছে।
নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামের মৃত্যুর খবর শুনে হাউস মাইনরিটি লিডার হাকিম জেফরিজ এক বিবৃতিতে বলেন, “এই কঠিন সময়ে ঈশ্বর যেন এনওয়াইপিডি এবং আমাদের শহরের সুরক্ষা নিশ্চিত করেন। আমরা দিদারুল ও অন্যান্য নিহতদের জন্য প্রার্থনা করছি।”
‘গান ভায়োলেন্স আর্কাইভ’ জানায়, এটি ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ২৫৪তম গণগুলির ঘটনা। সংস্থাটি বলছে, যেখানে এক হামলায় অন্তত চারজন ব্যক্তি (হামলাকারী ব্যতীত) নিহত বা আহত হন, সেটিকে গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।