ভারতের রাজনীতিতে তীব্র বিতর্ক তৈরি করেছে বিরোধীদের ‘ভোট চুরি’র অভিযোগ। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন, ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে অনিয়ম করে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে সুবিধা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন । বিজেপি ও নির্বাচন কমিশন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বিবিসির তথ্যমতে, মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সংসদে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগের পর অধিবেশন স্থগিত হয়। একদিন আগে নয়াদিল্লিতে নির্বাচন কমিশন দপ্তর অভিমুখে মিছিলের চেষ্টা করলে রাহুল গান্ধীসহ কয়েকজন নেতাকে সাময়িক আটক করে পুলিশ। ৭ আগস্ট রাহুল প্রথম সংবাদ সম্মেলনে ‘ভোট চুরি’র অভিযোগ আনেন।
রাহুলের দাবি, ব্যাঙ্গালুরু কেন্দ্রীয় আসনের মহাদেবপুরায় ১ লাখের বেশি ভোটার অনিয়ম করে নিবন্ধিত হয়েছে। অনেকের নিবন্ধন ডুপ্লিকেট, ঠিকানা ভুল, এমনকি একই ব্যক্তি একাধিক কেন্দ্রে ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত। তিনি এক ঠিকানায় ৮০ জনের নিবন্ধনের উদাহরণ দেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, এসব অনিয়মে অন্তত ৪৮টি আসন তারা হেরেছে। ইসি ভোটকেন্দ্রের সিসিটিভি ফুটেজও মুছে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ইসি অভিযোগ অস্বীকার করে রাহুলকে ক্ষমা চাইতে বলে। কেরালা কার্যালয় জানায়, ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় কংগ্রেস কোনো আনুষ্ঠানিক আপত্তি দেয়নি। সিসিটিভি ফুটেজ ৪৫ দিন সংরক্ষণের নিয়ম বলেও জানানো হয়। বিজেপি নেতা ও শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রাধান অভিযোগকে ‘গণতন্ত্রের জন্য উদ্বেগজনক’ বলেন। কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বিরোধীদের সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তোলেন।
এ সময় বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়েও বিতর্ক চলছে। নভেম্বরে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। ইসি বলছে, মৃত ও ডুপ্লিকেট ভোটার বাদ দিতে সংশোধন আনা হচ্ছে। তবে অনেক ভোটারের অভিযোগ, খসড়া তালিকায় ভুল ছবি, মৃত ব্যক্তির নাম এবং বিশেষ করে অভিবাসী ও সংখ্যালঘুদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
সংশোধনী নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন হয়েছে, যেখানে বাদ পড়া প্রায় ৬৫ লাখ ভোটারের নাম ও কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। ইসি জানায়, বাদ পড়াদের মধ্যে ২২ লাখ মৃত, ৭ লাখের বেশি ডুপ্লিকেট এবং ৩৬ লাখ স্থানান্তরিত। রাহুল গান্ধী ১২ আগস্ট উদাহরণ দিয়ে বলেন, বিহারের খসড়া তালিকায় ১২৪ বছর বয়সী ভোটারের নামও রয়েছে, আর “কাহিনী এখানেই শেষ নয়”।
সিটিজি পোস্ট/ এসএইচএস