গাজীপুরে ধর্ষণের প্রতিবাদে চবিতে ছাত্রী সংস্থার বিক্ষোভ
চবি প্রতিনিধি | সিটিজি পোস্ট
প্রকাশিত হয়েছে: ২১ অক্টোবর, ২০২৫

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনা এবং অব্যাহতভাবে নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদ ও প্রতিকারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রীসংস্থা। এসময় তারা 'ধর্ষনের বিচার না হলে রাষ্ট্রই অপরাধের অংশীদার' এমন লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ডসহ নানা প্লাকার্ড হাতে দেখা যায় তাদের।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে ফেস্টুন এবং বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে অপরাধীদের বিচারের দাবি জানায় আন্দোলনকারীরা।
এসময় তারা ''প্রতিটি ধর্ষনের পিছনে রাষ্ট্রের নীরবতা দায়ী", "ভয় নয়, বিচার চাই", " আমরা ক্লান্ত প্রতিবাদে, এবার বিচার চাই", "যে নীরব থাকে, সে অন্যায়ের সহযোদ্ধা", " ধর্ষনের বিচার না হলে, রাষ্ট্রই অপরাধের অংশীদার" ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে শাখা ইসলামী ছাত্রীসংস্থার সেক্রেটারি ও চাকসুর ছাত্রীকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক নাহিমা আক্তার দীপা বলেন, '' আমরা স্বাধীন রাষ্ট্রে বাস করছি কিন্তু এখানে নারী ও শিশুরা নিরাপদ নেই। বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে, ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে কিন্তু অপরাধীদের বিচার করা হচ্ছে না। বিচারের দৃষ্টান্তমূলক প্রতিফলন রাষ্ট্র দেখাতে পারছে না। এসবের পিছনে কারণ হচ্ছে রাষ্ট্রের নীরবতা,সামাজিক উদাসীনতা। আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি শুধু প্রতিবাদ জানাতে নয় আমরা প্রতিকার ও জবাবদিহিতার দাবি নিয়ে এসেছি।"
এসময় তিনি কিছু দাবী তুলে ধরেন।
দাবি উপস্থাপন করে তিনি বলেন, "আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত চাই। বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা বন্ধ করে তাড়াতাড়ি সুষ্ঠু বিচারকার্য সম্পন্ন করতে হবে, বিচারের কাজ তরান্বিত করতে হবে।
আমরা নৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে চাই। আমরা চাই সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নারী নির্যাতনের মনিটরিং সেল গঠন করা হোক।"
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রীসংস্থার প্রচার সম্পাদক উমাইমা শিবলী রিমা বলেন, '' ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত নারীর উপর সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ২৭হাজার ৪৭৯টি। গড় হিসেবে প্রতিবছর ৫হাজার নারী সহিংসতার শিকার হয়েছেন। শিশু নির্যাতনের ঘটনা তো রয়েছেই। এগুলো তো সংবাদ মাধ্যমে আসে এছাড়াও অনেক ঘটনা সামনে আসে না লজ্জা এবং ভয়ের কারণে ভুক্তভোগীরা আড়াল করে যান।"
তিনি আরো তথ্য তুলে ধরে বলেন, "২০২৫ সালের তথ্য আরো বেশি উদ্বেগজনক। কেননা এবছর প্রথম ৬ মাসে ৪৮১জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, ৩২০জন নারী ও শিশু হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। ২০২৫ সালের শুধুমাত্র জানুয়ারী মাসেই ৮৫জন কন্যা শিশু ও ১২০জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আমরা রাষ্ট্রের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই এ ধরনের ঘটনায় কয়টির বিচার হয়েছে।"
শাখা ছাত্রীসংস্থার প্রতিনিধি তাওফিকা রহমান বলেন, ''নারী ও শিশু নির্যাতন দমন অধ্যাদেশ ২০২৫' এর ধারা ৯ এর ব্যাখ্যা হচ্ছে কোনো ব্যক্তি যদি ১৬ বছরের কম কোনো শিশুর সাথে তার সম্মতি রেখে কিংবা সম্মতি ব্যতিত যৌনকর্ম করেন তবে তা উক্ত ব্যক্তির দ্বারা ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে আমরা দেখেছি গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ঘটনায় যে ভিক্টিম সে ১৩বছরের একজন শিশু। তার ক্ষেত্রে পুলিশের যে বিবৃতি দেয়া হয়েছে আমরা সেটি প্রত্যাখ্যান করছি। এটি কেবলই প্রেমের সম্পর্ক হতে পারে না। ১৬ বছরের কম বয়সী কোনো শিশুর সাথে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী অবশ্যই সেটি ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হবে।"




