সৌদি ক্লাব ফুটবলের বিপুল অর্থ ও তারকাবহুল দল আল হিলালকে হারিয়ে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্স। জেদ্দার কিং আব্দুল্লাহ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সেমিফাইনাল ম্যাচে ২-১ গোলে জয় পায় ঐতিহ্যবাহী ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটি।
বিশ্বব্যাপী আলোচিত এই ম্যাচটি ছিল দুই ভিন্ন বাস্তবতার লড়াই—একদিকে সৌদি পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের আর্থিক ছায়ায় গড়ে ওঠা, নেইমার ও রুবেন নেভেসদের মতো তারকায় ভরপুর আল হিলাল; অন্যদিকে বাজেট সংকটে থাকা কিন্তু ঐতিহ্য ও আবেগে ভরপুর ফ্লুমিনেন্স।
ম্যাচের আগে ফ্লুমিনেন্স কোচ রেনাতো পোর্তালুপ্পি স্পষ্টই বলেছিলেন, “ব্যাংক-ব্যালেন্স দিয়ে ফুটবল হয় না, খেলার ফয়সালা হয় মাঠেই।” সেই কথারই যেন প্রতিফলন ঘটেছে ম্যাচে।
৪০ মিনিটে মাথিয়াস মার্টিনেল্লির গোলে ফ্লুমিনেন্স প্রথম লিড নেয়। ৫১ মিনিটে মার্কাস লিয়েনার্দো গোল করে আল হিলালকে সমতায় ফেরান। ৭০ মিনিটে, বদলি খেলোয়াড় হারকিউলিস দুর্দান্ত এক গোল করে ব্রাজিলিয়ান ক্লাবকে এগিয়ে দেন।
আল হিলাল ম্যাচে ৫৮ শতাংশ বলের দখল রেখে ১৫টি শট নিলেও গোলের খাতায় এগিয়ে থাকতে পারেনি। ম্যাচের শেষ সময় পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়েও ফ্লুমিনেন্সের গোললাইন ভাঙতে পারেনি সৌদি জায়ান্টরা।
ম্যাচটি শুরু হয় এক হৃদয়বিদারক পরিবেশে। সম্প্রতি এক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া লিভারপুল তারকা দিয়েগো জোতার ভাইয়ের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। শোক সত্ত্বেও মাঠে নামেন আল হিলালের পর্তুগিজ মিডফিল্ডার রুবেন নেভেস।
ম্যাচ শেষে আল হিলালের কোচ বলেন, “এটি আমাদের জন্য এক তিক্ত রাত। কিন্তু ছেলেরা ক্লান্তির মধ্যেও নিজেদের উজাড় করে দিয়েছে। আমি গর্বিত।” উল্লেখ্য, মাত্র ১৬ দিনে ৫টি ম্যাচ খেলেছে সৌদি ক্লাবটি।
অন্যদিকে, ফ্লুমিনেন্সের জয় বিশ্ব ফুটবলে প্রমাণ করেছে—টাকার কাছে সব কিছু নয়, মাঠের লড়াই আর দলগত ঐক্যই আসল শক্তি।
এই জয়ে ফ্লুমিনেন্স প্রথমবারের মতো ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ হবে ম্যানচেস্টার সিটি অথবা জাপানের উরাওয়া রেড ডায়মন্ডস।