বুধবার (৭ আগস্ট) দুদকের সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মুহা. শোয়াইব ইবনে আলম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম বলেন, আরামিট গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহায়তায় সাবেক ভূমিমন্ত্রীর আত্মীয় সৈয়দ নুরুল ইসলামকে 'ক্রিসেন্ট ট্রেডার্স' নামে একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মালিক সাজানো হয়। এরপর ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর ইউসিবি জুবিলী রোড শাখায় ভুয়া তথ্য ও জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে একটি চলতি হিসাব খোলা হয়।

তিনি জানান, ব্যাংকের তৎকালীন কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান ও মাকসুদ আহম্মেদ যাচাই-বাছাই ছাড়াই নিয়মবহির্ভূতভাবে হিসাবটি খোলেন। এ কাজে আরামিট সিমেন্টের অ্যাকাউন্টস ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হোছাইন চৌধুরীও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, পরে ‘ক্রিসেন্ট ট্রেডার্স’-এর নামে ভুয়া আবেদন জমা দিয়ে ইউসিবির জুবিলী রোড শাখার কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, কান্তা দাশ গুপ্তা, মাকসুদ আহম্মেদ ও শাখাপ্রধান মোহাম্মদ আবদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত ক্রেডিট কমিটি মিথ্যা পরিদর্শন প্রতিবেদন তৈরি করে ঋণের প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবটি ১৭টি নেতিবাচক পর্যবেক্ষণসহ করপোরেট ব্যাংকিং ও ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মাধ্যমে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে উপস্থাপন করা হয়।

এরপর ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ইউসিবির পরিচালনা পর্ষদের ৪৪৭তম সভায় ২৫ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে ২৪ কোটি টাকা ব্যাংকের জেনারেল লেজারে এবং ১ কোটি টাকা চলতি হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। এই অর্থ বিভিন্ন ব্যাংকে খোলা অ্যাকাউন্টে পে-অর্ডারের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয় এবং একপর্যায়ে তা রিভারসাইড এন্টারপ্রাইজের ঋণ পরিশোধে ব্যবহৃত হয়।

এ ছাড়া সাইফুজ্জামান চৌধুরীর কর্মচারী মো. ইয়াছিনুর রহমান নগদে উত্তোলন করেন ১ কোটি টাকা।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার, মিথ্যা তথ্য, জাল দলিল ও প্রতারণার মাধ্যমে একটি অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ ঋণ আদায় করে তা আত্মসাৎ করেন। ফলে ইউসিবি ২৫ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, যা প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত।

মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে: সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী রুকমীলা জামান, আত্মীয় সৈয়দ নুরুল ইসলাম, ইউসিবির সাবেক কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান, মাকসুদ আহম্মেদ, সাইফুল ইসলাম, কান্তা দাশ গুপ্তা, মোহাম্মদ আবদুল করিম, আরামিট গ্রুপ সংশ্লিষ্ট সৈয়দ কামরুজ্জামান, ব্যবসায়ী আবদুল খালেক, রিভারসাইড এন্টারপ্রাইজের সংশ্লিষ্ট মোহাম্মদ হোছাইন চৌধুরী, নগদ উত্তোলনে জড়িত মো. ইয়াছিনুর রহমান, ইউসিবি পিএলসির তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা।

সিটিজি পোস্ট/ এসএইচএস