প্রশিক্ষণের নামে ভুয়া বিল তৈরি করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা ও তাঁর নেতৃত্বাধীন কমিশনের একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, হুদা কমিশনের বিরুদ্ধে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা খরচ দেখিয়ে নীতিমালা লঙ্ঘন এবং রাষ্ট্রীয় অর্থের অপব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “সাবেক সিইসি, কমিশনার, সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুমোদনহীন ব্যয় ও ভুয়া বিলের মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। অনুসন্ধানে আরও কোনো অনিয়ম থাকলে তা-ও খুঁজে বের করা হবে।”
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে এই অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটে।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্টের ১০ জন আইনজীবী দুদকে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগপত্রে কে এম নূরুল হুদা ছাড়াও নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরীর নাম উঠে আসে। এছাড়া বর্তমান ইসি সচিব মো. আলমগীর হোসেন ও তৎকালীন সচিব হেলালুদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন এবং ইসির নিজস্ব নীতিমালার তোয়াক্কা না করেই প্রশিক্ষণের নামে ভুয়া বিল তৈরি করে ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। এতে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় হয়েছে।
উল্লেখ্য, কে এম নূরুল হুদা ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং তাঁর অধীনেই অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ওই কমিশনের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই পক্ষপাতিত্ব, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিয়ে বিতর্ক ছিল।
হুদা কমিশনের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যয়, প্রশিক্ষণ আয়োজন, যন্ত্রপাতি কেনা এবং নিয়োগ কার্যক্রমেও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠে। টিআইবি ও সুজনসহ একাধিক সংগঠন নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
এছাড়া, চলতি বছরের ২২ জুন কে এম নূরুল হুদাকে একটি ভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপরই ইসির সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের সময়কার অনিয়মের বিষয়টি আবারো আলোচনায় আসে।
সিটিজি পোস্ট/ এসএইচএস