বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া নির্মূলের লক্ষ্য ঘোষণা করলেও পাহাড়ি জেলাগুলোতে সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। রাঙামাটিতে জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ২ হাজার ৪২৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন দুই শিশু।চিকিৎসকরা বলছেন—ভৌগোলিক অনুকূলতা ও সচেতনতার অভাবই মূল কারণ। অন্যদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছায় না এবং সরকারি চিকিৎসার সুযোগ সীমিত।পাহাড়ি বন, ঝোপঝাড়, ঝিরি-ঝর্ণায় মশার প্রজনন দ্রুত হয়। আর্দ্র আবহাওয়া, জমে থাকা পানি ও টানা বৃষ্টি মশার বিস্তারে সহায়ক। ফলে অন্যান্য এলাকার তুলনায় এখানে মশার সংখ্যা বেশি। জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, বরকল ও বাঘাইছড়ি সীমান্তবর্তী এলাকায় আক্রান্ত বেশি। ভারত ও মিয়ানমার থেকে আসা সংক্রমিত মানুষ স্থানীয় মশার মাধ্যমে রোগ ছড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি নিয়ন্ত্রণকে আরও কঠিন করছে। দুর্গম এলাকায় চিকিৎসা পৌঁছাতে সময় লাগে, ডাক্তার ও জনবলও কম। অনেকে হাসপাতালে না গিয়ে স্থানীয় ওঝা বা ঝাড়ফুঁকের কাছে যান।রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শওকত আকবর খান বলেন—সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমন্বিতভাবে কাজ করছে। জনগণকে সচেতন করতে হবে—নিয়মিত মশারি ব্যবহার ও মশার কামড় থেকে বাঁচতে অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।রাঙামাটি সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা জানান—গত বছরের তুলনায় এ বছর সংক্রমণ বেড়েছে। মাঠ পর্যায়ে আমাদের কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। সন্দেহ হলে পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। ব্রাকের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৬০ হাজার ৯৬৫টি কীটনাশকযুক্ত মশারি বিতরণ করা হয়েছে।তিনি আরও জানান, ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যাতে আক্রান্তের সংখ্যা কমানো যায়।সার্বিকভাবে দেখা যাচ্ছে, সীমান্তবর্তী ভৌগোলিক বাস্তবতা, চিকিৎসাসেবা না পাওয়া এবং সচেতনতার অভাবের কারণে রাঙামাটিতে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ এখনো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়েছে।