চট্টগ্রাম নগরীর পুরাতন রেল স্টেশন চত্বরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল হুঁশিয়ারি করে বলেন, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের সংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো মিথ্যাচার বা অপপ্রচার সহ্য করা হবে না।

তিনি বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে চলমান ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের নেপথ্যে যে অপশক্তি কাজ করছে, জনগণ তা ভালোভাবেই জানে। তাদের প্রতি আহ্বান- এসব থেকে সরে এসে সত্যের পথে ফিরে আসুন। না হলে এই অগণতান্ত্রিক অপশক্তিকে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলা হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদ।

মীর হেলাল আরও বলেন, সংস্কারের নামে জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার নতুন নতুন ফাঁদ তৈরি করা হচ্ছে। অথচ বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচিতে স্পষ্টভাবে গণতান্ত্রিক সংস্কারের রূপরেখা উল্লেখ রয়েছে। নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চালানো হলে জনগণ তা রুখে দাঁড়াবে। দেশের স্থায়ী সমাধান কেবল জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারই দিতে পারবে।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর এজেন্ডা বাস্তবায়নে দুটি ইসলামী রাজনৈতিক দল সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এর মধ্যে একটি দলের ইতিহাস রক্তাক্ত, যারা পাকিস্তানের দোসর হিসেবে শুরু করে পরে এরশাদ ও পরবর্তীতে শেখ হাসিনার সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। এসব ইতিহাস জনগণ ভুলে যায়নি।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মোশাররফ হোসেন দীপ্তি বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফলেই বাংলাদেশ একসময় ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছিল। এখন আবার সেই অর্জন হুমকির মুখে। বিএনপি বহু বছর ধরে জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করে যাচ্ছে। এই আন্দোলনে অনেক নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছেন, অনেকে গুম হয়েছেন, আবার অনেকেই মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন। দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দলকে নিশ্চিহ্ন করার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।"

এ সময় মুহাম্মদ শাহেদ বলেন, জাতীয় স্বার্থে রাজনৈতিক মতপার্থক্য ভুলে প্রফেসর ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তকে ঘিরে দেশি-বিদেশি অপশক্তির মদদে একটি চক্র বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে বিএনপির গণভিত্তিকে দুর্বল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। বিশেষ করে লন্ডন বৈঠকের পর ষড়যন্ত্র আরও ঘনীভূত হয়েছে। পুরান ঢাকার মিডফোর্ড এলাকায় একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে অস্থিরতা সৃষ্টি করে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র চলছে, যা একটি পক্ষপাতদুষ্ট অপপ্রচার।

বিক্ষোভে আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন, সহ-সভাপতি আজমল হুদা রিংকু, নুর আহমেদ গুড্ডু, এস এম শাহ আলম রব, শাহেদ আকবর, এম এ রাজ্জাক, ফজলুল হক সুমন, সাইফুল আলম রুবেল, মোর্শেদ কামাল সাজ্জাদ আহমেদ সহ আরো অনেকে।

বিক্ষোভ শেষে একটি বর্ণাঢ্য মিছিল পুরাতন রেল স্টেশন চত্বর থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আন্দরকিল্লা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।