সরকারি সূত্রে জানা গেছে, আজকের ভাষণে দেশের বিচার ও সংস্কার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি, অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের অর্জন এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের সময়রেখা তুলে ধরতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা। যদিও সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা নাও আসতে পারে, তবে নির্বাচন কমিশনকে ২০২৬ সালের রমজানের আগেই ভোটের আয়োজনের আহ্বান জানানো হতে পারে। সম্ভাব্য সময় ধরা হচ্ছে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির ১৭ তারিখের আগেই।

বিকেল ৫টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় একযোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘জুলাই শহিদ’ পরিবারের সদস্য, আহত আন্দোলনকারীরা এবং দেশের সব প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। সমাবেশ শেষে প্রধান উপদেষ্টা পাঠ করবেন বহু প্রতীক্ষিত “জুলাই ঘোষণাপত্র”।

এই ঘোষণাপত্রে উল্লেখ থাকতে পারে— যুদ্ধাপরাধ ও সহিংসতার বিচারে অগ্রগতি, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য ভিত্তিক সংলাপের অঙ্গীকার, প্রশাসনিক ও নির্বাচনী সংস্কারের রূপরেখা

সরকারের একাধিক সূত্র বলছে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ রাতেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। ভাষণের সম্ভাব্য সময় রাত ৮টার আগে।

ভাষণে থাকছে— অন্তর্বর্তী সরকারের গত এক বছরের পর্যালোচনা, বিচার ও শুদ্ধি অভিযানের অগ্রগতি, “জাতীয় ঐকমত্য কমিশন”-এর কার্যক্রম, আসন্ন সংসদ নির্বাচনের সময়সীমা ও প্রস্তুতির নির্দেশনা

তবে ভাষণে নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা।

এক বছর আগে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। এরপর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে।

মূলত, এই দুটি দিন—৫ আগস্ট ও ৮ আগস্ট—নিয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণের পরিকল্পনা থাকলেও প্রধান উপদেষ্টা ‘সরকার গঠনের দিন’ নয়, বরং ‘গণঅভ্যুত্থানের দিন’-কে গুরুত্ব দিতে চান বলে আজই ভাষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত ২৬ জুলাই রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ১৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে সংলাপে নির্বাচনের সময়রেখা নিয়ে আলোচনা করেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপর ২৮ জুলাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতিমূলক বৈঠক হয়।

এর আগে, লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা জানান, ২০২৬ সালের রমজানের আগেই নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁর বাণীতে বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পর দেশ এখন একটি সাম্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ গঠনের পথে।”

প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বাণীতে বলেন, “গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে বেগবান করতে সব রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কার ও নির্বাচনের পথ উন্মুক্ত রাখা হবে। আমাদের দায়িত্ব রাষ্ট্রক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া।”