রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগ নেতা দীপংকর দেকে ঘিরে স্লোগান দেওয়ার পর পটিয়ায় থানার মাঠে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের অভিযোগ উঠেছে। এতে অন্তত ১১ জন ছাত্র আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতদের মধ্যে আশরাফুল ইসলাম তৌকির (২১) ও সাইফুল ইসলাম (১৭)–কে প্রথমে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়ার পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার রাত প্রায় পৌনে ১০টার দিকে। এর আগে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর পটিয়ার নেতাকর্মীরা ‘জুলাই দিবস’ উপলক্ষে শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করেন। কর্মসূচি শেষে থানার মোড় হয়ে ফেরার পথে তারা রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগ নেতা দীপংকর দেকে দেখতে পান এবং তাকে ঘিরে থানার মাঠে স্লোগান দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত ছাত্রদের ভাষ্যমতে, স্লোগানের কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ছুটে এসে অতর্কিতে লাঠিচার্জ করে। এতে আহত হন আরও ৯ জন ছাত্র—মো: নাদিম (২১), মো: আয়াস (১৬), মো: আকিল (১৮), মো: ইরফান উদ্দিন (১৮), তাসরিয়ান হাসান (১৮), মো: রায়হান উদ্দিন (২০), জাহেদুল করিম শাহী (১৮), মুনতাসির আহমদ (১৭), এবং সাইফুল ইসলাম (১৮)। আহত সবাই পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।
পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো: নওশাদ জানিয়েছেন, “আহতদের শরীরে লাঠির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গুরুতর আহত দু’জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে রেফার করা হয়েছে।”
আহত তৌকির বলেন, “আমরা দীপংকরকে ঘিরে স্লোগান দিই, কারণ তার নামে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তাকে শান্তিপূর্ণভাবে পুলিশকে হস্তান্তর করি। কিন্তু পুলিশ আমাদের কিছু না বলেই হঠাৎ লাঠিচার্জ করে।”
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, পটিয়া থানার ওসি’র বিরুদ্ধে অতীতেও বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে তিনি রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালীদের সঙ্গে যোগসাজশে অবৈধ মাটি কাটার ব্যবসার সুরক্ষা দিয়ে থাকেন।
এ ঘটনায় আজ সকালেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন - মহানগর ও দক্ষিণ অঞ্চলের ছাত্ররা বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বাইপাস রোড অবরোধ করার ঘোষণা দিয়েছেন। আন্দোলনকারীরা জানান, “শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের হামলা আমরা মেনে নেব না। এ ঘটনার বিচার চাই।”
এদিকে আহত ছাত্র রিদওয়ান সিদ্দিক ও সায়েদ–কে গুরুতর অবস্থায় পটিয়া থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ ঘটনার বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।