ছাত্রনেতা পুষ্পিতা নাথ এর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী সংগঠক জশদ জাকির, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর সহ-সভাপতি রিপা মজুমদার, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, চট্রগ্রাম জেলা আহ্বায়ক এ্যানি চৌধুরী, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সুদেব চাকমা। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দেশ ছাত্র ফেডারেশন, চট্টগ্রাম নগর সভাপতি সাইফুর রূদ্র। এছাড়াও সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন এর সাধারন সম্পাদক রিতা চাকমা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল দুর্ভোগ আজ নতুন নয়। বহু বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ও প্রগতিশীল সংগঠনসমূহ শাটলে বগি বৃদ্ধিসহ ও নিরাপদ ক্যম্পাসের দাবি জানিয়ে আসলেও প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। এটাই সারাদেশের শিক্ষাঙ্গনগুলোর প্রশাসনিক চিত্র।

শাটলের দূর্ঘটনা বাস্তব অর্থে দূর্ঘটনা নয় বরং প্রশাসনের অবহেলা দাবি করে বক্তারা বলেন, এর দায় প্রশাসনকে নিতে হবে। বক্তারা আরও উল্লেখ করেন, দূর্ঘটনার দিন দুপুরে ট্রেনের উপর পরে থাকা গাছের আঘাতে এক ছাত্র আহত হয় এবং প্রশাসনকে জানায়। কিন্তু ছাত্রবিরোধী প্রশাসনের অবহেলার কারণে রাতে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে ২০ জন আহত হয়। এই দায় প্রশাসনকে অবশ্যই নিতে হবে।

গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতাদের হাসপাতাল পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা নিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, যে চিকিৎসা চট্টগ্রাম মেডিকেলে দেয়া হচ্ছে তা অপর্যাপ্ত এবং অবহেলার আরেক চিহ্ন। অবিলম্বে আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

কাপ্তাইয়ে সেনা কর্তৃক গণধর্ষণের বিচারের দাবি জানিয়ে
বক্তারা বলেন, গত ৫০ বছরে পার্বত্য অঞ্চলে সেনা-সেটেলর কর্তৃক সংগঠিত অসংখ্য ধর্ষণের বিচার না হওয়ার কারণেই আজকে এর পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। মিডিয়ার নীরবতা, প্রশাসনিক রুদ্ধতা প্রমাণ করে বিচার করার কোন মনোভাব এ সরকারের নেই, পূর্বকার সকল ঘটনার মতন এবারও দামাচাপা দেয়াই একমাত্র লক্ষ্য সরকারের। পার্বত্য অঞ্চলে ধর্ষণ-খুন-গুম থেকে জনগণকে রক্ষা করতে জনগণকেই বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রনেতা সাইফুর রূদ্র বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে অগণতান্ত্রিক ও শিক্ষাবিরোধী পরিবেশ কায়েম করা হয়েছে। ফলে অভিভাবকগণ সন্তানদের জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে সাচ্ছ্যন্দবোধ করেন। কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও আজকে একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সম্প্রতি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহমেদ আতিফ আবরার এর উপর ক্যম্পাসের অভ্যন্তরেই হামলা চালানো হয়েছে। এঘটনায় প্রমাণ হয়, সমস্যার বিকল্প খোঁজায় মুক্তি নেই। মুক্তির জন্য সমাধানের দাবি তুলতে হবে। শিক্ষাঙ্গনের সংকট, পার্বত্য অঞ্চলের দমন-পীড়ন-ধর্ষণসহ সকল ক্ষেত্রে বিরাজমান ফ্যাসিবাদের সংকট সমাধান করতে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।

গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের ১৩ দফার সংগ্রামে ছাত্র-অভিভাবক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে অনুষ্ঠিতব্য গণস্বাক্ষর কর্মসূচী ও স্মারক লিপি প্রদানে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে সমাবেশ শেষ হয়।।