জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্মকর্তাদের লাগাতার শাটডাউন কর্মসূচির কারণে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম। দেশের প্রধান বাণিজ্যিক বন্দরে এর ফলে চরম অচলাবস্থা ও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (২৮ জুন) সরেজমিনে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস ঘুরে দেখা গেছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে থাকায় অফিস কার্যত ফাঁকা। এতে আমদানি পণ্যের শুল্কায়ন, খালাস এবং রপ্তানি কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়েছে।
কাস্টমস গেটে অবস্থানরত কর্মকর্তা না থাকায় পণ্য স্ক্যানিং, পরীক্ষণ ও ছাড়পত্র কার্যক্রমও বন্ধ। ফলে আগে থেকেই শুল্কায়িত চালানগুলোর খালাসও আটকে গেছে। ব্যবসায়ীদের অনেকেই জানান, গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যদ্রব্য, শিল্প কাঁচামাল ও রপ্তানি পণ্যের শিপমেন্ট অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিলম্বিত হচ্ছে।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সূত্র জানায়, প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার কনটেইনার বন্দরে ওঠানামা করে। কার্যক্রম বন্ধ থাকায় প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কার ঐক্য পরিষদ জানিয়েছে, সারাদেশে ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট অফিসগুলোতে পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন কার্যক্রম চালু থাকবে।
তবে, আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এই কর্মসূচির আওতাভুক্ত নয়।
পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা রাজস্ব ব্যবস্থার কাঠামোগত সংস্কার, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থা চায়। এসব দাবির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে পরিষদ।
এক বিবৃতিতে তারা বলেন, “এই আন্দোলন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। এটি হচ্ছে দেশের স্বার্থে রাজস্ব কর্মকর্তাদের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধ। আমরা চাই অর্থ উপদেষ্টার মাধ্যমে এ সংকটের দ্রুত সমাধান।”
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বিজিএমইএ ও বন্দর সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, “চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে কার্যক্রম স্থবির হয়ে যাওয়ায় শিল্পখাত ও আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায় মহাসংকট তৈরি হয়েছে। দ্রুত সমাধান না হলে পণ্যচক্র ভেঙে পড়বে এবং বৈদেশিক মুদ্রা আয় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।”