প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নগরীর সড়ক কেটে পয়োপাইপলাইন বসানো। এজন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) থেকে অনুমতি নিতে হয় ওয়াসাকে। তবে বর্ষা মৌসুমে রাস্তা কর্তনের অনুমতি সীমিত করায় পাইপলাইন স্থাপনের কাজ চলছে সক্ষমতার মাত্র এক-তৃতীয়াংশ হারে।

দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ সরকারি বরাদ্দ। চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৬২৬ কোটি টাকা, যা চাহিদার তুলনায় কম। প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটি আরও ৪০০ কোটি টাকার অতিরিক্ত বরাদ্দের সুপারিশ করেছে।

তৃতীয় চ্যালেঞ্জ নগরীর ঘনবসতিপূর্ণ সরু রাস্তার এলাকায় কাজ করা। আগ্রাবাদ, রঙ্গিপাড়া, পাঠানটুলীসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পাইপলাইন বসাতে যন্ত্রপাতি পরিবহন ও স্থাপন কঠিন হয়ে পড়েছে।

চতুর্থ চ্যালেঞ্জ হালিশহরের ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এলাকায়। এখানে প্রক্রিয়াজাত পানি সাগরে ফেলার জন্য চ্যানেল নির্মাণের দায়িত্ব চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হলেও এখনো কাজ শুরু হয়নি। অথচ স্যুয়ারেজ প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালে, আর বন্দর কর্তৃপক্ষ চ্যানেল নির্মাণের সময় নির্ধারণ করেছে ২০২৭ সাল।

পঞ্চম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে রেলের অনুমতি। হালিশহরের বড়পুল এলাকায় ট্রাঙ্কলাইন স্থাপনের জন্য রেলের জমি সাময়িক ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে ১১ মাস আগে আবেদন করলেও এখনো কোনো সাড়া মেলেনি।

২০২২ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ছিল ৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। পরবর্তীতে সংশোধিত প্রস্তাবে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২১৯ কোটি টাকা। বর্তমানে প্রকল্পের ৬৯ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়াসা। এর মধ্যে পাইপলাইন স্থাপনে অগ্রগতি ৫০ শতাংশ এবং হালিশহরে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণে ৮৫ শতাংশ সিভিল কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

ওয়াসার প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, “পাঁচ চ্যালেঞ্জের কারণে প্রকল্পের গতি বাড়ানো যাচ্ছে না। তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।”

ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম জানান, চসিকের অনুমতি জটিলতা কাটাতে যৌথ কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠন করা হয়েছে। চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনও বলেন, বর্ষা শেষে উন্নয়ন কাজের সঙ্গে সমন্বয় রেখে রাস্তা কর্তনের অনুমতি দেওয়া হবে।

প্রকল্প শেষ হলে নগরীর প্রায় ২০ লাখ মানুষ স্যুয়ারেজ সেবার আওতায় আসবে। ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর এটি চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রথম স্যুয়ারেজ প্রকল্প।