আজ শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫) বাদে আসর জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ ৫-দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের উত্তর গেটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ মিছিলটি নিউমার্কেট মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন। উক্ত সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, একটি শ্রেণি আওয়ামী লীগ স্টাইলে নির্বাচন করার স্বপ্ন দেখছে। বাংলাদেশের মাটিতে আওয়ামী স্টাইলের কোনো নির্বাচন জনগণ আর হতে দেবে না। জুলাই হত্যাকাণ্ডের দৃশ্যমান বিচার শেষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যে দাবি বাস্তবায়নে জন্য রাজপথে নেমেছি, এসব দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. ইউনূস জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, ফ্যাসিবাদী ও তাদের দোসরদের দৃশ্যমান বিচার করবে এবং পাচারকৃত টাকা ফেরত আনবে, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করবে।
তিনি বলেন, অনেকে বলছে আমরা রাজপথে কেন নেমেছি? আমরা বলছি, রাজপথের আন্দোলন ও লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে দেশ থেকে ফ্যাসিবাদকে বিদায় দিয়েছে দেশের জনগণ। কাজেই রাজপথে জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জুলাই বিপ্লবের যে আকাঙ্ক্ষা সেটা আমরা বাস্তাবায়ন করবো।
পিআর নির্বাচন পদ্ধতির পক্ষে গণভোটের দাবি জানিয়ে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, আমরা চ্যালেঞ্জ নিচ্ছি, গণভোট দিন। জনগণ পিআর-এর পক্ষে আছে কি বিপক্ষে আছে। জনগণ যদি পিআর মানে অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারকেও মানতে হবে। আর জনগণ যদি বিপক্ষে যায় আমরা তা মেনে নেব। ফ্যাসিবাদের দোসরদের রাজনীতি অকার্যকর করে তাদের কার্যক্রম স্থগিত করতে হবে। মানবতাবিরোধী অপরাধের অপরাধীদের দৃশ্যমান বিচার করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, গোটা জাতি উৎসব মুখর নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে আছে। তিনি আরো বলেন, কেউ কেউ আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে জামায়াত নাকি নির্বাচন পিছাতে চায়। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই জামায়াত সবার আগেই তিনশত আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে কাজ শুরু করে দিয়েছে কিন্তু অন্যদের ক্ষেত্রে দৃশ্যমান কোনো নির্বাচনী কার্যক্রম চোখে পড়ে না। যারা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান, প্রয়োজনীয় সংস্কারে বাধাগ্রস্ত করছে এবং পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের বিরোধীতা করছে নিজেদের ভরাডুবি জেনে তারাই মুলত ফেব্রুয়ারীর নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে চায়।
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল আয়ুব খান ও ইয়াহিয়া খানের ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে। সত্তুরের নির্বাচনের ম্যান্ডেট মেনে না নেয়ার কারণে মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। তবে মুক্তিযুদ্ধের নামে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করা হয়েছে, যা মুক্তিযুদ্ধের স্পষ্ট অবমাননা। দু’হাজারের শাহাদাত, অসংখ্য পঙ্গুত্ব ও নির্যাতনের পর ৩৬ জুলাই বিপ্লব এসেছে এবং দীর্ঘ দেড় দশকের ফ্যাসিবাদী শাসন শেষ হয়েছে। পুনরায় ফ্যাসিবাদ ফিরিয়ে আনার যেকোনো চেষ্টা রোধ করতে হবে। জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিবাদী দোসরদের কার্যক্রম অবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। আধিপত্যবাদকে ভাড়া দিয়ে যারা রাজনীতি বা বুদ্ধিজীবীতা করছেন, তাদেরকেও বাংলাদেশ প্রত্যাখ্যান করবে। প্রভিশনাল সাংবিধানিক আদেশে জুলাই সনদের আইনি মর্যাদা ও ঘোষণাপত্রের গ্যাজেট প্রকাশ করতে হবে। প্রচলিত ভোটিং ব্যবস্থায় একদলীয় শতভাগ ক্ষমতা চর্চার পথ বন্ধ করতে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) সিস্টেমে নির্বাচন জরুরি। এতে ছোট-বড় সকল রাজনৈতিক দলের অংশীদারিত্ব ও ভোটারের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, ঐক্যমত্য কমিশনে প্রকাশিত অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার করলেই অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত হবে।লুটেরা, টাকা পাচারকারী খুনিদের দৃশ্যমান বিচার নিশ্চিত করে সকল দলের সমান সুযোগ তথা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করেই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন করতে হবে।
অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না হলে সংস্কারের কোনো ভিত্তি নেই। কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হলে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জনগণ রাজপথ থাকবে, ঘরে ফিরবে না।
সমাবেশ ও গণমিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস এবং এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক, ও সাবেক কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, কর্মপরিষদ সদস্য হামেদ হাসান ইলাহী, আমির হোসাইন, ফখরে জাহান সিরাজী সবুজ, মাহমুদুল আলম, জামায়াত নেতা ডা. মুহাম্মদ আবু নাছের, জামায়াত নেতা মুহাম্মদ শফিউল আলম প্রমুখ।
জামায়াতের ৫ দফা দাবিগুলো হল- জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা। আর এসব দাবি সরকার মেনে নিলে আগামীকালই নির্বাচন হলে জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে।
সিটিজিপোস্ট/জাউ
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, সংসদের উচ্চ কক্ষে পিআর ও প্রাথমিকে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগসহ ৬ দাবিতে আজ শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর২০২৫) বাদ জুমা চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ মসজিদের সামনে থেকে খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগরী শাখার বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত। মিছিলপূর্ব সমাবেশে বক্তাগণ বলেন অতি দ্রুত জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ ঘোষণা করে তা কার্যকর করতে আইনী ভিত্তি প্রদ...
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, সংসদের উচ্চ কক্ষে পিআর ও প্রাথমিকে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগসহ ৬ দাবিতে আজ শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর২০২৫) বাদ জুমা চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ মসজিদের সামনে থেকে খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগরী শাখার বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত। মিছিল...