জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে একটি ঘোষণাপত্র বিপুল ভোটে অনুমোদিত হয়েছে। শুক্রবার অনুষ্ঠিত ভোটে প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট পড়ে ১৪২টি, বিপক্ষে ১০টি এবং ১২টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে।
সাত পৃষ্ঠার এই ঘোষণাপত্রটি সৌদি আরব ও ফ্রান্সের উদ্যোগে আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ফল। গত জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল অংশ নেয়নি।
ঘোষণাপত্রে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের সমাধানে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক বাস্তবসম্মত ও সময় নির্ধারিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে, যা থেকে গাজা যুদ্ধের সূত্রপাত। পাশাপাশি গাজায় ইসরায়েলের বেসামরিক জনগণের ওপর হামলা, অবরোধ ও অনাহারেরও নিন্দা জানানো হয়েছে।
প্রস্তাবটির বিপক্ষে ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। তাদের সঙ্গে ছিল আর্জেন্টিনা, হাঙ্গেরি, মাইক্রোনেশিয়া, নাউরু, পালাউ, পাপুয়া নিউগিনি, প্যারাগুয়ে ও টোঙ্গা।
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল বারো এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে জানান, এই প্রস্তাব হামাসকে আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করেছে। তিনি বলেন, “প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ এমন একটি নথি গ্রহণ করেছে, যা হামাসের অপরাধের নিন্দা করেছে এবং তাদের আত্মসমর্পণ ও নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানিয়েছে।”
যুক্তরাষ্ট্র এই ভোটকে ‘ভুল সময়ে করা লোক দেখানো কাজ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। মার্কিন কূটনীতিক মরগান অর্টাগাস বলেন, এই প্রস্তাব শান্তি প্রতিষ্ঠা না করে বরং যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করছে এবং হামাসকে উৎসাহিত করছে।
অন্যদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন একে “একপেশে” আখ্যা দিয়ে বলেন, “এর একমাত্র সুবিধাভোগী হলো হামাস। সন্ত্রাসীরা যখন উল্লাস করে, তখন শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় না; বরং সন্ত্রাস উৎসাহিত হয়।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয় ১ হাজার ২০০ মানুষ, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। এছাড়া প্রায় ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, গাজায় চলমান যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
সিটিজি পোস্ট/ এসএইচএস