চট্টগ্রামের নিউমার্কেটে গোলাগুলির ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, ব্যবসায়ী, পুলিশ-সেনা কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মিলিয়ে মোট ১৮২ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন গুলিবিদ্ধ এক ছাত্র। চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো— মামলার আসামির তালিকায় রয়েছেন একজন মৃত ব্যক্তির নাম, যিনি চার বছর আগেই মারা গেছেন।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে এ নালিশী মামলা করেন আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্সেস অফ হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র এ কে এম নুরুল্লাহ। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার সদর থানার বগাদিয়া বিন্নাগাঁও গ্রামের রতন মিয়ার ছেলে। বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাসনিম আক্তার নিশাত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো শাখাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের চট্টগ্রামে এনে পুলিশ ও ভারতীয় বাহিনীর সাথে মিলে ৩৬ দিনব্যাপী হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। শনাক্তকরণ এড়াতে আসামিরা তাদের মোবাইল সিম নিজ এলাকায় রেখে এসেছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাদীর দাবি, তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং মামলায় নিরীহ ও নিরপরাধ কাউকে অন্তর্ভুক্ত না হয় তা নিশ্চিত করতে যাচাই-বাছাই করতে সময় লেগেছে। তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক আসামির নাম ‘বিশ্বস্ত সূত্রে’ যাচাই করেছেন।
উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান জাবেদ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, সাবেক সিএমপি কমিশনার সাইফুল ইসলাম, সাবেক চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সাবেক মেয়র রেজাউল করিম, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মো. সাইফুল আলম, শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা সাবেক মেজর তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জেনারেল মুজিবুর রহমান, সাবেক সিইসি নুরুল হুদা, কাজী হাবিবুল আউয়াল, সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক এবং চবকের পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম।
সাবেক সংসদ সদস্যদের মধ্যে নাম এসেছে নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি, মাহবুবুর রহমান রুহেল, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আবদুর রহমান বদি, দিদারুল আলম, আশেক উল্লাহ রফিক, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সাইমুম সরওয়ার কমল, এস এম আল মামুন, এম এ লতিফ, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবু রেজা মো. নেজামুদ্দিন নদভী, ফজলে করিম চৌধুরী, মুজিবুর রহমান এবং মোস্তাফিজুর রহমানের।
এছাড়া চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক ২৪ জন কাউন্সিলরকেও আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু, যিনি ২০২১ সালের ১৮ মার্চ মারা যান। তবুও তাকে মামলার তালিকায় ১৫০ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
আরও আসামি করা হয়েছে নগরীর কোতোয়ালী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, তদন্ত কর্মকর্তা, বিভিন্ন উপ-পরিদর্শক, সহকারী উপ-পরিদর্শকসহ ৩০ থেকে ৪০ জন অজ্ঞাত পুলিশ সদস্য এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অজ্ঞাত ৫০ থেকে ৬০ জন নেতাকর্মীকে।
বাদী মামলায় নিজেকে ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় যোদ্ধা’ পরিচয় দিয়ে অভিযোগ করেন, গেলো বছরের ৪ আগস্ট নিউমার্কেট এলাকায় শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে যোগ দেন তিনি। ওইদিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ওবায়দুল কাদের, বিপ্লব বড়ুয়া, বিপ্লব পার্থ, ড. হাসান মাহমুদ, নেজাম উদ্দিন নদভী ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পরিকল্পনায় পুলিশ-আওয়ামী সন্ত্রাসীরা দেশি-বিদেশি অস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে বাদীসহ ১৫-২০ জন ছাত্র আহত হন।
গুলিবিদ্ধ নুরুল্লাহকে অন্য ছাত্ররা দুপুরে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। অস্ত্রোপচারে তার শরীর থেকে তিনটি রাবার বুলেট ও ১৩টি লিথ্যাল বুলেট বের করা হলেও এখনও কয়েকটি গুলি শরীরে বিদ্ধ অবস্থায় রয়ে গেছে।
বাদীর ভাষ্য অনুযায়ী, গেলো বছরের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ ভারতীয় বাহিনীর সাথে মিলে চট্টগ্রামে হত্যাযজ্ঞ চালায়। শনাক্তকরণ এড়াতে তারা মোবাইল সিম ব্যবহার করেনি।
তিনি আরও জানান, গেলো ৮ আগস্ট কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ মামলা নিতে অনীহা প্রকাশ করে। তাই আদালতের শরণাপন্ন হন তিনি।
মৃত কাউন্সিলরের নাম আসামির তালিকায় কেন এমন প্রশ্নের জবাবে বাদী বলেন, “আমি নিজস্ব সোর্স ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে যাচাই করেছিলাম। হয়তো কোনো কারণে ভুল হয়েছে। বিষয়টি আমাকে আবার যাচাই করতে হবে।”
সিটিজি পোস্ট / এমসি
৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ, সন্ত্রাসীদের বিচার ও আহত শিক্ষার্থীদের উন্নত চিকিৎসাসহ বিভিন্ন দাবিতে মশাল মিছিল করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। আজ ৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা মশাল...
৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ, সন্ত্রাসীদের বিচার ও আহত শিক্ষার্থীদের উন্নত চিকিৎসাসহ বিভিন্ন দাবিতে মশাল মিছিল করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। আজ ৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার...