পাশের শতকরা হারে চট্টগ্রাম বোর্ডের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ
জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী কমেছে প্রায় চার হাজার, বোর্ড বলছে কঠোর মূল্যায়নই প্রধান কারণ
নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
প্রকাশিত হয়েছে: ১৬ অক্টোবর, ২০২৫

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এ বছরের উচ্চমাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটিতেই বড় ধরনের পতন ঘটেছে। এবারে পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৫২ দশমিক ৫৭ শতাংশ, যা গেলো বছরের ৭০ দশমিক ৩২ শতাংশ থেকে প্রায় ১৮ শতাংশ কম। একইভাবে, এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬ হাজার ৯৭ জন শিক্ষার্থী, যেখানে গেলো বছর এই সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ২৬৯ জন।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী সকালে বোর্ড মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ গেলো বছরের তুলনায় অনেক কম। এর মূল কারণ হচ্ছে এবার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী খাতার মূল্যায়নে কঠোরতা বজায় রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা খাতায় যা লিখেছে, কেবল সেটির ভিত্তিতেই নম্বর দেওয়া হয়েছে। অতি মূল্যায়নের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই আন্দোলনের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটেছিল। এছাড়া তিন পার্বত্য জেলায় পাসের হার অনেক কম, যা সার্বিক ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে।”
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ২ হাজার ৯৭০ জন। এর মধ্যে অংশগ্রহণ করেছেন ১ লাখ ১ হাজার ৮৮৮ জন। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ছাত্রদের পাসের হার ৪৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং ছাত্রীদের পাসের হার ৫৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
বিভাগভিত্তিক ফলাফলে বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার সর্বোচ্চ ৭৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ, মানবিক বিভাগে ৩৭ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৫৫ দশমিক ৩০ শতাংশ। অঞ্চলভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চট্টগ্রাম মহানগরে পাসের হার ৭০ দশমিক ৯০ শতাংশ, আর মহানগর বাদে চট্টগ্রাম জেলায় পাসের হার ৪৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ। মহানগরসহ পুরো চট্টগ্রাম জেলায় গড় পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৫৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
চট্টগ্রাম জেলার শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে পাসের হার শতভাগ। প্রতিষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণকারী ৪৯ জন শিক্ষার্থী সবাই উত্তীর্ণ হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে হালিশহর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, যেখানে পাসের হার ৯৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ। সরকারি কমার্স কলেজে পাসের হার ৯৯ দশমিক ১২ শতাংশ, চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজে ৯৯ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে ৯৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
এছাড়া ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে পাসের হার ৯৮ দশমিক ১৭ শতাংশ, চট্টগ্রাম কলেজে ৯৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ, চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৯৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ, নৌ বাহিনী স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৯৬ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং সরকারি হাজি মুহাম্মদ মহসিন কলেজে ৯৫ দশমিক ৬১ শতাংশ।
শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা মনে করছেন, ফলাফলে এই পতন একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের জন্য সতর্কবার্তা, অন্যদিকে এটি ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক দিকও হতে পারে। তাদের মতে, কঠোর মূল্যায়ন শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় আরও মনোযোগী করবে এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
সিটিজি পোস্ট /এমসি

.jpg&w=3840&q=75)

.png&w=3840&q=75)
.png&w=3840&q=75)