পদত্যাগপত্র সদৃশ ওই পোস্টে তিনি সংগঠনটির বিরুদ্ধে গোষ্ঠীস্বার্থ, পদবির জন্য চক্রান্ত, ছাত্রদের ব্যবহার, আদর্শচ্যুতি ও নৈতিক বিপর্যয়-এর অভিযোগ আনেন। একইসঙ্গে তিনি বলেন, সংগঠনটিতে “সংস্কার, শহীদ, আহত—এসব শুধু মুখের বুলি ছিল” এবং “অনেক ছাত্র পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে যুক্ত হলেও সবার সঙ্গে ছলনা হয়েছে”।

উমামা বলেন, “আমি প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে চাইলেও আমাকে থামিয়ে দেওয়া হতো, আবার প্রচার চালানো হতো আমি কাউকে কাজ করতে দিচ্ছি না।”
তিনি অভিযোগ করেন, প্ল্যাটফর্মটির নেতৃত্বাধীন সিন্ডিকেট তার বিরুদ্ধে ‘স্মিয়ার ক্যাম্পেইন’ চালিয়েছে, তাকে চাপে রাখা হয়েছে, এবং “মুখপাত্র হয়েও পেইজ অ্যাকসেস দেওয়া হয়নি”।

তিনি আরও জানান, কাউন্সিলের নামে নির্বাচন হলেও সেখানেও লবিং, দলীয় তৎপরতা ও পক্ষপাতিত্ব হয়েছে। এমনকি ভোট না দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েও শেষ মুহূর্তে ভোট দিয়েছেন শুধুমাত্র “প্ল্যাটফর্মে কিছু ভালো কাজ হোক” সেই আশা থেকে। কিন্তু ফলাফলের পর দেখেন, “নির্বাচনে অংশ না নেওয়া একজনকেও মেম্বার করে ফেলা হয়েছে।”

জুলাই অভ্যুত্থানের সময়কার স্বপ্নের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “আমি অভ্যুত্থানের স্বপ্নকে রক্ষার জন্য এই প্ল্যাটফর্মে গিয়েছিলাম। প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার আগে আমাকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল আমি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারব। কিন্তু মুখপাত্র হিসেবে যাওয়ার পরেই টের পাই সংস্কার, শহীদ, এসব মুখের বুলি মাত্র।”

তিনি আরও বলেন, “অনেক ভালো ছেলে-মেয়ে ছিল প্ল্যাটফর্মে, কিন্তু তারা সুবিধাবাদীদের কাছে ঠাঁই পায়নি। আমি এখন এই ব্যানার থেকে সব ধরনের সমর্থন ও কাউন্সিলে দেওয়া ভোট প্রত্যাহার করছি।”

শেষে তিনি বলেন, “আমি পরামর্শ দেব, আপনারা সবাই যাতে পড়ার টেবিলে মনোযোগ দেন, কাজে মনোযোগ দেন। আমিও ভেঙে পড়ছি না, গুছিয়ে আনছি সবকিছু।”

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি বা মুখ্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকে উমামা ফাতেমার পদত্যাগ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, উমামা ফাতেমা গত বছরের জুলাইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক ছাত্র অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। পরে তিনি এনসিপি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের সাথে যুক্ত হন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব নেন।